পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে...
রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

মনা পাগলার উপাখ্যান

কে.এম আনোয়ারুল কবীর

১ম পর্ব
এক বন্ধুর পীরাপিরিতে মনা পাগলার ডেরায় যেতে হলো, বাসা থেকে ছয় কিলো দুরে রেল লাইনের ধারে। বন্ধুর চোখে সে আধ্যাত্বিক পাগল। আমার কাছে তেমন মনে হলো না।

তবে, তার মন কাড়া কিছু কথা হৃদয় ছুয়ে গেলো, যেমন-
(১) কান্না হলো মনের রোগের মহা ঔষধ। চোখের পানি অঝোরে যতো ফেলবি, মন ততো হালকা হবে। মেয়েরা এই কান্নার ওষুধের সুন্দর সদ্ব্যবহার করতে পারে। অল্পকিছুতেই প্রচুর কেঁদেকেটে মনের অসুখকে দৌড়ে পালাতে বাধ্য করে। আর ছেলেরা সহজে কাঁদতে পারেনা বলে মনের প্রেশারে স্ট্রোক, হার্ট আ্যটাকে দ্রুত ধরাশায়ী হয়। তাই বাঁচতে হলে প্রাণ ভরে, দুনয়ন জুড়ে কান্নার প্রাকটিস কর্। এ হেন দার্শনিক টাইপ কথাতে কিছুটা আকর্ষিত না হয়ে পারলাম না।

মনা পাগলার একার সংসার। ঠিক একা না, একটা কালো কুকুর সাথী। এক বিছানাতেই দুজনার বসবাস। বললাম, নাপাক পশুকে সাথে নিয়ে কেনো থাকেন? মৃদু হাসি দিয়ে বললেন- পাক্ কালাম পড়ে দ্যাখ্ – ৩০৯ বছর গুহার দরজায় পা দুটি প্রসারিত করে পাহারারত অবস্হায় আসহাবে কাহাফের সঙ্গি ছিলো যে কুকুর, সে কি করে নাপাক হয়?

বললাম – আপনার এ দুজনার সংসার চলে কি করে?

বললেন – আল্লাহই চালায় রে পাগলা আর মাঝে মাঝে নিজেই চালাই।
-নিজে চালান মানে, এটা বুঝলাম না।

আরে পাগলা – মাঝে মাঝে না খেয়েই দিন পারি দেই।

ওনার ডেরায় ঘনিষ্ঠ হয়ে বসলাম, বেশ ভালোই লাগছে।
দু তিনটা কাক ডেরার সামনে ওনার ছুড়ে দেয়া উচ্ছিষ্ট খাবার ভাগ করে খাচ্ছে। উনি দরদ দিয়ে তাদের খাওয়ার দৃশ্য উপভোগ করছেন।
শোন্ রে পাগলা ( পাগলরা সবাইকে পাগল ভাবে) কাক খুবই ভালো পাখি। আল্লাহ তায়ালার খুবই প্রিয়। আল্লাহ কাককেই প্রথম পাঠিয়েছেন আদম সন্তানকে কবর দেয়া শিখানোর জন্য।

অল্প সময়ে অনেক কিছু শিখলাম। আরো অনেক কিছু জানার আছে বুঝলাম। কাক দরদী পাগলা বাবাকে ঐতিহ্যবাহী কাউয়া চত্বরে নাহিদের দোকানে চা চক্রের দাওয়াত দিয়ে সেদিনের মতো বিদায় নিলাম। ( চলবে)

লেখক: সিনিয়র শিক্ষক,গাইবান্ধা সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়।

আরো পড়ুন

মতামত দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সর্বশেষ সংবাদসমূহ

বিশেষ সংবাদ