ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
ক্যারিয়ারের প্রথম ২৫টি ওয়ানডে ম্যাচ শেষে তার ব্যাটিং গড় ছিল মাত্র ২৪.৯৫; নেই পঞ্চোশোর্ধ্ব কোনো ইনিংস। এর মধ্যে আবার ২০ রানের নিচেই আউট হয়েছেন ১৪ বার। তিনি কোনো বোলারও নয় যে, বল করে সেটা পুশিয়ে দেবেন। কিন্তু এরপরেও একজন ক্রিকেটার দিব্যি খেলে গেছেন জাতীয় দলে। হ্যাঁ সেটা শুধুমাত্র তার ফিল্ডিং দক্ষতার জন্যই। তার এমন ফিল্ডিংয়ের কারনেই বিশ্ব ক্রিকেট নতুন করে ভাবনা শুরু করে ফিল্ডিং নিয়ে। তিনি দুর্দান্ত সব ক্যাচ, রান আউট আর ফিল্ডিং করে ব্যাটারদের ঘুম হারাম করা দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটার জন্টি রোডস।
ফিল্ডিং করার সময় বেশিরভাগ সময়েই দাঁড়াতেন পয়েন্ট, ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট কিংবা গালি অঞ্চলে। তার সামনে বল ফেলে রান নেওয়ার সাহস খুব কম ব্যাটসম্যানই দেখিয়েছেন। এমনকি তার মাথার উপর দিয়ে কিংবা আশপাশ দিয়ে শূন্যে ভাসিয়ে বল পাঠানোর আগেও কয়েকবার চিন্তা করতেন সেসময়ের বাঘা বাঘা ব্যাটাররা। কারণ অন্য ফিল্ডারদের জন্য যে ক্যাচ ধরাটা দুরূহ, সেটিই খুব অনায়াসে যেন ধরে ফেলতেন জন্টি রোডস। তিনি ছিলেন ক্রিকেট মাঠের উরন্ত পাখি।
‘সর্বকালের সেরা বোলার কিংবা সেরা ব্যাটসম্যান’ নিয়ে যতই বিতর্ক থাকুক না কেন, ‘সর্বকালের সেরা ফিল্ডার’ নিয়ে মোটামুটি কোনো বিতর্ক নেই। সেখানে জন্টি রোডসের বিকল্প ভাবাটাই দুষ্কর। তবে ক্যারিয়ারে শেষদিকে এসে জন্টি মনোযোগ দিয়েছিলেন ব্যাটিংয়েও।
তবে শুধু ক্রিকেটেই নয়, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন জন্টি রোডস। ক্রিকেটের পাশাপাশি তিনি ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার হকি জাতীয় দলেরও গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ১৯৯২ সালের অলিম্পিক দলেও ছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার দল বাছাইপর্ব পেরুতে ব্যর্থ হয়। ১৯৯৬ অলিম্পিকেও তিনি দলে জায়গা পান। কিন্তু এবার বাদ সাধে ইনজুরি। ক্রিকেটীয় দক্ষতার কারণে ১৯৯৯ সালের উইজডেনের বর্ষসেরা পাঁচ জন খেলোয়াড়ের একজন নির্বাচিত হন।
১৯৯২ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত মোট ৪টি বিশ্বকাপ খেলেছেন জন্টি। রঙিন পোশাকে ক্যারিয়ার লম্বা করতে ২০০ সালে ছেড়েছিলেন টেস্ট ক্রিকেট। ২০০৩ বিশ্বকাপে কেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে একটি ক্যাচ ধরতে গিয়ে ইনজুরিতে পড়েন জন্টি রোডস। ডাক্তারের হিসেব মতে, চার থেকে পাঁচ সপ্তাহ তাকে মাঠের বাইরে থাকতে হতো; কিন্তু এই অবস্থায় আচমকাই অবসর নিয়ে নেন তিনি।
পুরো নাম: জোনাথন নেইল জন্টি রোডস ।
জন্ম: ২৭ জুলাই, ১৯৬৯ সাল।
জন্মস্থান: পিটারমারিৎজবার্গ, নাটাল প্রদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা ।
রাশি: সিংহ রাশি।
প্রিয় খেলা: ক্রিকেট।
প্রিয় খাবার: মহীশূর মসলা দোসা।
প্রিয় পানীয়: মসলা চা।
প্রিয় রং: সাদা, কালো।
প্রিয় ক্রিকেটার: স্যার ভিভ রিচার্ডস।
প্রিয় ক্রিকেট দল: দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল।
প্রিয় সতীর্থ: গ্যারি কার্স্টেন ।
প্রিয় গাড়ি: ইসুজু এমএক্স-ইউ।
প্রিয় স্টেডিয়াম: বেসিন রিজার্ভ, ওয়েলিংটন।
প্রিয় শখ: ভ্রমণ, সিনেমা দেখা।
প্রিয় জুতার ব্র্যান্ড: অ্যাডিডাস।