পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে...
রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

মধ্যপ্রাচ্যে পোশাক রফতানি বাড়ছে

ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
প্রধান প্রধান বাজারে তৈরি পোশাক রফতানিতে আশানুরূপ প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না। তবে আশার আলো দেখা যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। কেননা এই অঞ্চলে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রফতানি বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে। যেমন মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান দুই দেশ সৌদি আরবে বাংলাদেশি পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬৩ শতাংশের বেশি, আর সংযুক্ত আরব আমিরাতে পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৬ শতাংশের বেশি। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো ও বিজিএমইএ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো মূলত নতুন বাজারের অন্তর্ভুক্ত। নতুন বাজারের মধ্যে সৌদি আরব ও আরব আমিরাতে যে হারে পোশাক রফতানি বাড়ছে তাতে অল্প দিনেই ওই অঞ্চলে বাংলাদেশের পোশাক আরও শক্ত অবস্থান করে নেবে।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আট মাসে সৌদি আরবে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রফতানি হয়েছে ২১৪ দশমিক ৯২ মিলিয়ন ডলারের। এর আগের বছর, অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে দেশটিতে পোশাক রফতানি হয়েছিল ১৪৬ দশমিক ০২ মিলিয়ন ডলারের। সে হিসাবে আগের অর্থবছরের চেয়ে এই অর্থবছরে সৌদি আরেব পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

মধ্য প্রাচ্যের আরেক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলতি অর্থবছরের আট মাসে পোশাক রফতানি হয়, ২৮২ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন ডলারের। ২০২২-২৩ অর্থবছরের আট মাসে দেশটিতে পোশাক রফতানি হয়েছিল ২০৬ দশমিক ৮৭ মিলিয়ন ডলারের পোশাক। সে হিসাবে আগের বছরের চেয়ে চলতি বছরে আট মাসে আরব আমিরাতে পোশাক রফতানি বেড়েছে ৩৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

সৌদি আরবসহ নতুন বাজারে পোশাক রফতানি বৃদ্ধির বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, নতুন বাজার বা অপ্রচলিত বাজারগুলোতে রফতানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের দুই মাসেই অপ্রচলিত বাজারগুলোতে রফতানি ১.৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা ২০২৩ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ছিল ১.৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

তিনি জানান, নতুন বাজারের মধ্যে আরও যেসব দেশে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে তার মধ্যে আছেÑতুরস্কে ৭৯.৭০ শতাংশ, চীনে ৪৫.৬১ শতাংশ, রাশিয়ায় ১৮.৪৯ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ায় ১৪.৩৩ শতাংশ এবং কোরিয়ান প্রজাতন্ত্রে ১৩.৪৯ শতাংশ।

ফারুক হাসান আরও বলেন, রফতানি বাজার কাঠামোতে এমন গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আমি আমার সহযোগী উদ্যোক্তাদের গভীর কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জানাই। তাদের দূরদর্শী পদক্ষেপের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। বিজিএমইএ বাজার বৈচিত্র্যকরণে সর্বদা সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। বিগত ৩ বছরে আমরা বাজার অনুসন্ধানে ব্যাপকভাবে কাজ করেছি। আমরা বিশ্বকে এই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি যে বাংলাদেশ এখন প্রিমিয়াম পণ্যসহ বিভিন্ন আইটেমের প্রয়োজন মেটাতে নিজেকে যথেষ্ট প্রস্তুত করেছে, আরও সক্ষমতা অর্জন করেছে, যা সমাজ ও পরিবেশের ওপর ইতিবাচক প্রভাব রাখে।

এদিকে তথ্য অনুয়ায়ী ২০২৪ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ থেকে সব দেশে মোট পোশাক রফতানি ৯.৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ১৩.১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, অর্থবছরের দিক থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারিতে আমাদের পোশাক রফতানিতে ৪.৭৭ শতাংশ গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যার অর্থ হলোÑউল্লিখিত অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (অর্থাৎ জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৩) রফতানি বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল এবং এই বছরের জানুয়ারি থেকে রফতানির পুনরুদ্ধার শুরু হয়েছে।

অপরদিকে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সংযুক্ত পরিসংখ্যানগুলোর দিকে তাকালে আপনারা দেখতে পাবেন যে বাংলাদেশের বৃহত্তম পোশাক রফতানি গন্তব্য, ইইউতে পোশাক রফতানি ৪.২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ১৫.৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪.৮৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা ২০২৩ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৪.২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান বাজার জার্মানি, গত কয়েক মাস ধরে ক্রমাগত পতন দেখাচ্ছে। তা ছাড়া ফ্রান্স, স্পেন ও ইতালিতে রফতানি ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সময়ে পোশাক রফতানি ফ্রান্সে ৫৩৬.৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে (১২.৩৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি), স্পেনে ৭৩৭.৮৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে (১৪.২৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি) এবং ইতালিতে ৪৫৬.৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে (৬.৮৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি) পৌঁছেছে। ডেনমার্কের রফতানিও ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। ডেনমার্কে ২০২৪ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে পোশাক রফতানি পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬০.০৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধিসহ ৩৮৩.৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।

তথ্যসূত্রঃসময়ের আলো

আরো পড়ুন

মতামত দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সর্বশেষ সংবাদসমূহ

বিশেষ সংবাদ