নিজস্ব প্রতিবেদক, গাইবান্ধা:
গাইবান্ধা জেলার পাঁচটি আসনের মধ্যে তিনটিতেই নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। এরমধ্যে দুইজন বর্তমান সংসদ সদস্যের দায়িত্বে আছেন। এছাড়া গাইবান্ধা-৪ আসনে বাদ পড়েছেন বর্তমান সদস্য প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন চৌধরী। এবার তার জায়গায় নৌকার মাঝি হয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ। অন্যদিকে গাইবান্ধা-৫ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মাহমুদ হাসান রিপন।
চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়া তিন নারী প্রার্থী হলেন, গাইবান্ধা-১ আসনে আফরুজা বারী, গাইবান্ধা-২ আসনে মাহবুব আরা বেগম গিনি ও গাইবান্ধা-৩ আসনে এ্যাড. উম্মে কুলসুম স্মৃতি।
এরমধ্যে সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-২ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মাহবুব আরা বেগম গিনি। তিনি জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্বে আছেন। এ আসনে ২০০৮ সাল থেকে টানা তিনবার নৌকার প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন মাহবুব আরা বেগম গিনি। এবার তিনি লড়বেন চতুর্থবারের মতো।
গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) দুই উপজেলা নিয়ে ও আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন এ্যাড. উম্মে কুলসুম স্মতি। তিনি কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক। ২০২০ সালে অনুৃষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি নির্বাচিত হন। এ আসনের আ.লীগের সংসদ সদস্য ডা. ইউনুস অলী সরকারের মৃত্যুতে শূন্য হয় আসনটি। এরআগে তিনি সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।
এছাড়া দ্বিতীয়বারের মতো গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন আফরুজা বারী। তিনি সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্বে আছেন। আফরুজা বারী এ আসনের সংসদ সদস্য প্রয়াত মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের বড় বোন। ২০১৮ সালের উপ-নির্বাচনে নৌকা প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আফরুজা বারী। ওই নির্বাচনে তাকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। এরআগে, সংসদ সদস্য প্রয়াত মঞ্জুল ইসলামের লিটনের মৃত্যুতে ২০১৬ সালের উপ-নির্বাচনেও দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাকে বাদে দলটি গোলাম মোস্তফাকে মনোনয়ন দিলে তিনি এমপি নির্বাচিত হন।
এদিকে, দলীয় মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েছেন গাইবান্ধা-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন চৌধরী। তার জায়গায় এবার মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদকে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে আবুল কালাম আজাদ বিদ্রোহী প্রার্থী হন। ওই নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন চৌধুরীকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন আবুল কালাম আজাদ। এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চেয়েও পাননি তিনি। দলটি আবারও প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন চৌধুরীকে মনোনয়ন দেয়। পরে বিএনপির (স্বতন্ত্র) প্রার্থীকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন মনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
এ আসনটিতে আবুল কালাম আজাদ ও মনোয়ার হোসেন চৌধুরীসহ দলের মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন ১৪ জন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রার্থী ছিলেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ প্রধান।
অপরদিকে, গাইবান্ধা-৫ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মাহমুদ হাসান রিপন। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন এ বছরের ৪ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন। এ আসনে টানা ছয়বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন এ্যাড. ফজলে রাব্বীর মিয়া। তিনি জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার ছিলেন। ২০২২ সালের ২৩ জুলাই ফজলে রাব্বি মিয়ার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়।
জেলার সাতটি উপজেলা ও চারটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত পাঁচটি সংসদীয় আসন। এই পাঁচটি সংসদীয় আসনে নবীণ-প্রবীণ মিলে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন ৫৪ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী। এরমধ্যে গাইবান্ধা-১ আসনে ১০ জন, গাইবান্ধা-২ আসনে ৮ জন, গাইবান্ধা-৩ আসনে ১৪ জন, গাইবান্ধা-৪ আসনে ১৪ জন ও গাইবান্ধা-৫ আসনে ৮ জন দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন।
সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে রবিবার (২৬ নভেম্বর) বিকাল ৪টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নৌকার মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।