ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
বিজয়া দশমীর মাধ্যমে দেবী দুর্গা ফিরে গেছেন স্বামীগৃহ কৈলাসে। তবে মর্ত্যে রয়ে গেছেন তার কন্যা দেবী লক্ষ্মী। শারদীয় দুর্গাপূজা শেষে প্রথম পূর্ণিমা তিথিতে দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। আজ শনিবার সেই তিথি। ভোর ৪ টা ১৭ মিনিটে শুরু হবে পূজা। পরের দিন রোববার রাত ১টা ৫৬ মিনিট পর্যন্ত রয়েছে পূর্ণিমা তিথি।
এদিকে, আজ প্রতি ঘরে পূজিতা হবেন দেবী লক্ষ্মী। সাধারণত প্রতি বৃহস্পতিবারই বাঙালি হিন্দু নারীরা লক্ষ্মীদেবীর পূজা করেন। একে নিত্য লক্ষ্মীদেবীর পূজা বলা হয়। আজকের পূজা কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা নামেও পরিচিত। কোজাগরী শব্দটি এসেছে ‘কো জাগর্তী’ থেকে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস কোজাগরী পূর্ণিমার দিন দেবী নিশিথ রাতে প্রতিটি মানুষের গৃহে বলে থাকেন, ‘কে আছো জেগে?’ এদিকে, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আজ লক্ষ্মীপূজা ও আগামীকাল রোববার বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রবারণা পূর্ণিমা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক ও অধ্যাপক ড. চন্দ্র নাথ পোদ্দার।
শাস্ত্রমতে, দেবী লক্ষ্মী ধন-সম্পদ তথা ঐশ্বর্যের প্রতীক দেবী। উন্নতি (আধ্যাত্মিক ও পার্থিক), আলো, জ্ঞান, সৌভাগ্য, উর্বরতা, দানশীলতা, সাহস ও সৌন্দর্যের দেবীও তিনি। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, পূর্ণিমা রাতে দেবী লক্ষ্মী ধনধান্যে ভরিয়ে দিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে পূজা গ্রহণ করতে আসেন। লক্ষ্মীদেবী সন্তুষ্ট থাকলে সংসারে অর্থকষ্ট থাকবে না ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বাড়বে।
প্রাচীনকাল থেকেই রাজা-মহারাজা, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি বাঙালি হিন্দুর ঘরে লক্ষ্মীপূজা করা হয়। এ উপলক্ষে হিন্দু নারীরা উপবাস ব্রত পালন করেন। মন্দিরের চেয়ে ঘরোয়া পরিবেশে পূজার আনুষ্ঠানিকতা বেশি করা হয়। পূজা-অর্চনার পাশাপাশি ঘর-বাড়ির আঙিনায় আঁকা হয় লক্ষ্মীর পায়ের ছাপের আল্পনা। সন্ধ্যায় ঘরে ঘরে প্রদীপ প্রজ্বালন করা হয়। বাঙালি বিশ্বাসে লক্ষ্মীদেবী দ্বিভুজা ও তার বাহন পেঁচা এবং হাতে থাকে শস্যের ভান্ডার। তবে বাংলার বাইরে লক্ষ্মীর চতুর্ভুজা কমলে-কামিনী মূর্তিই বেশি দেখা যায়।
রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ, পঞ্চানন্দ শিব মন্দির, গৌতম মন্দির, পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার, তাঁতিবাজার, সূত্রাপুর, ফরাশগঞ্জ, লক্ষ্মীবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘরোয়া পরিবেশে লক্ষ্মীপূজার বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।