ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
উচ্চ আদালতের নির্দেশে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের (জিআই) তালিকা প্রস্তুত করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে পরবর্তী সময়ে নিবন্ধন হতে পারে এমন সম্ভাব্য ভৌগোলিক পণ্যের একটি তালিকাও প্রস্তুত করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশে নিবন্ধিত জিআই পণ্যের সংখ্যা ৩২টি উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলায় থাকা ১৫১টি পণ্যকে সম্ভাব্য ভৌগোলিক পণ্যের তালিকায় রাখা হয়েছে।
সোমবার (৬ মে) বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি এসএম মনিরুজ্জামানের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চে এই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
এদিকে টাঙ্গাইল শাড়িকে ‘টাঙ্গাইল শাড়ি অব বেঙ্গল’ হিসেবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিবন্ধনের প্রেক্ষিতে উদ্ভূত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ল’ ফার্ম ম্যাসন অ্যান্ড এসোসিয়েটসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে এই ল’ ফার্ম আইনি লড়াইয়ে অংশ নেবে।
দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে রেজিস্ট্রেশনযোগ্য ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের (জিআই) তালিকা করতে শিল্প মন্ত্রণালয়কে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জিআই পণ্য হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করা পণ্যের তালিকা দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়। ওই নির্দেশনা মোতাবেক এ সংক্রান্ত তালিকা প্রস্তুত করে হাইকোর্টে দাখিল করা হয় বলে জানান রিটকারী পক্ষের কৌসুলি ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য ১৫১ জিআই পণ্যের তালিকা:
রাজধানী ঢাকার মিরপুরের কাতান, বাকরখানি, মুন্সিগঞ্জের পাতক্ষীর, আড়িয়াল বিলের খলসা, মানিকগঞ্জের খেজুরের রসের হাজারী গুড়, গাজীপুরের কাঁঠাল, কাপাশিয়ার পেয়ারা, লেবু, নরসিংদীর বাবুরহাটের তাঁতবস্ত্র, কিশোরগঞ্জের চ্যাঁপা শুটকি, অষ্টগ্রামের পনির, রাতাবোরো চাল, ফরিদপুরের খেজুর রস/খেজুরের গুড়, পাট, বাগাটের দই, গোপালগঞ্জের শিং মাছ, রিঠা মাছ, চিতল মাছ, ব্রোঞ্জের অলঙ্কার, মাদারীপুরের খেজুরের গুড়, রইনা মাছ, শরীয়তপুরের চিকন্দীর পাতক্ষীরা, কালোজিরা, রাজবাড়ীর মালাইকারি, বসন্তপুরের লুঙ্গি, গামছা, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার লালচিনি, বিরই চাল, গফরগাঁওয়ের বেগুন, নেত্রকোনার টেপি বোরো চাল, বিরই চাল, বালিশ মিষ্টি, সিলিকা বালি, সুমেশ্বরীর মহাশোল, জামালপুরের প্যারা সন্দেশ, ইসলামপুরের কাশা, ম্যান্দা (চালের গুড়া ও গরুর মাংসের তৈরী বিশেষ খাবার), শেরপুরের ছানার পায়েস, কুমিল্লার খাদি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টি, কুটী বাজারের ক্ষীর ভোগ, মাঠা, চট্টগ্রামের রেড চিটাগাং গরু/লালগরু, সাম্পান, মেজবানি কালো ভুনা, নোয়াখালীর মহিষের দুধের দই, ফেনীর সুতার তৈরী কারুকার্যময় টুপি, কক্সবাজারের টেকনাফের সুপারি, চিংড়ি শুটকি, মহেশখালীর পান, খাগড়াছড়ির হলুদ, পিনন (মহিলাদের পরিধেয় বস্ত্র), হাদি (পিননের সাথে পরিধেয় ওড়না জাতীয় বস্ত্র), বাঁশকুড়ল মার্মা পিঠা, বিনি পিঠা, সান্যা পিঠা, রাঙ্গামাটির চাকমাদের তাঁতবস্ত্র, জলডুবির আনারস, সাজেকের কমলা, হলুদ, আদা, মরিচ, বান্দরবানের আদা, জুমের বিন্নিধান, পিনন, সিলেটের মনিপুরি শাড়ি, সাতকড়া, কমলালেবু, সিলেট মৌলভীবাজারের লেবু (জারা, আধাজামির), চুঙ্গাপিঠা, চা, শ্রীমঙ্গলের আনারস, সুনামগঞ্জের বারকি নৌকা, পাথর, রাণীমাছ, হবিগঞ্জের পশুরশাইল চাউল, খাসিয়া পান, বগুড়ার শুকনো মরিচ, লাল আলু, পাবনার তাঁতের শাড়ি, লুঙ্গি, চলনবিলের কই, সিরাজগঞ্জের গামছা, তাঁতের শাড়ি, লুঙ্গি, ধুতি, তরল দুধ, মিল্ক ভিটা (দই, ঘি, মাখন, দুধ), যমুনার বাঘা আইড়, নওগাঁর নাক ফজলী আম, সুগন্ধি চাল, কালিতলার প্যারা সন্দেশ, বরই, জয়পুরহাটের লতিরাজ কচু, হাড়িভাঙা মিষ্টি, নাটোরের কাঁচা গোল্লা, আম, রংপুরের বৈরালী মাছ, দিনাজপুরের বেদানা লিচু, ঢেঁকি ছাঁটা চিড়া, কুড়িগ্রামের উলিপুরের ঐতিহ্যবাহী ক্ষীরমোহন মিষ্টি, গাইবান্ধার রসমঞ্জুরী, যমুনার আইড় মাছ, নীলফামারীর বাঁশ, বাঁশের কফিন, লালমনিরহাটের ভুট্টা, তামাক, ঠাকুরগাঁওয়ের সূর্যপুরী আম, খুলনার হরিনা চিংড়ী, সুন্দরবনের মধু, চুই ঝাল, গলদা চিংড়ি, সুন্দরবনের মধু, ভেটকি মাছ, বাগেরহাটের সুন্দরবনের মধু, গোলপাতা, সাতক্ষীরার মাটির টালী, কেওড়ার আচার, ভাঙ্গান মাছ, পারশে মাছ, নারকেল কুল, যশোরের জামতলার রসগোল্লা, নকশি কাঁথা, নড়াইলের প্যারা সন্দেশ, মাগুরার ছানা মিষ্টি, হাজরাপুরী লিচু, মেহেরপুরের সাবিত্রী মিষ্টি, সাবিত্রী রসকদম, হিমসাগর আম, ঝিনাইদহের সন্দেশ, মহেশপুরের ঘটি দই, কালিগঞ্জের ল্যাংচা, হরি ধান, কুষ্টিয়ার কুমারখালির চাদর, বেডশিট, বরিশালের আমড়া, গৌরনদীর দই, গুটিয়ার সন্দেশ, ঝালকাঠির গামছা, নলছিটির মুড়ি, ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই, গুড়ের মিষ্টি, পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির পেয়ারা, বরগুনার রাখাইন তাঁতবস্ত্র, সুপারি, তরমুজ, পটুয়াখালীর মৃৎশিল্প।
নিবন্ধিত ৩২ জিআই পণ্য:
ঢাকার জামদানি, ঢাকাই মসলিন, টাঙ্গাইলের শাড়ি, পোড়াবাড়ির চমচম, মধুপুরের আনারস, নরসিংদীর অমৃতসাগর কলা, লটকন, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মন্ডা, নেত্রকোনার বিজয়পুরের সাদামাটি, জামালপুরের নকশি কাঁথা, শেরপুরের তুলশিমালা ধান, কুমিল্লার রসমালাই, চাঁদপুরের ইলিশ, সিলেটের শীতল পাটি, মৌলভীবাজারের আগর, আগর আতর, বগুড়ার দই, রাজশাহীর মিষ্টি পান, রাজশাহী সিল্ক, রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফজলি আম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাতি আম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া আম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আশ্বিনা আম, রংপুরের শতরঞ্জি, রংপুরের হাড়িভাঙা আম, দিনাজপুরের কাটারীভোগ, বাগেরহাটের বাগদা চিংড়ি, যশোরের খেজুর গুড়, চুয়াডাঙ্গার ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, ভোলার ইলিশ।
প্রতিবেদনে শিল্প মন্ত্রণালয় বলেছে, উপরোক্ত তালিকায় উল্লেখিত পণ্যসমূহ পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পেতে পারে।