পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে...
শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

বিএনপি লুটেরা ও সন্ত্রাসীতে বিশ্বাসী: প্রধানমন্ত্রী

ছয়দফা নিউজ ডেস্ক:
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০১৮ নির্বাচনে হল। বিএনপি মাত্র ৩০ টা সিট পেয়েছিল। এরা লুটেরা সন্ত্রাসীতে বিশ্বাসী। এরা মানুষের কোন কল্যাণ করতে পারে না। তারা জনগণকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চায়। যারা যাত্রী পিতাকে হত্যার মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। যুদ্ধাপরাধের রাজনীতি করা নিষিদ্ধ ছিল, তাদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে। তারা এদেশে কোনদিন গণতন্ত্র এনে দিতে পারে না। তারা দেশের গণতন্ত্রের ধ্বংস করে দিতে চায়। যেখানে দারিদ্র্যের হাঁটছিলে ৪১ ভাগ। এখন যেখানে আমি নিয়ে এনেছি ১৮ ভাগে। একটা মানুষের গৃহহীন থাকবে না। ভূমিহীন থাকবে না।

শুক্রবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগ আয়োজিত জাতির জনক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের স্মরণে সর্ব বৃহৎ ছাত্রসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। এর আগে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে মাতৃভূমি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। স্মারক নৌকা প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেয় ছাত্রলীগ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন ঘুণে ধরা সমাজকে নতুন করে সাজাতে। কিন্তু দুর্ভাগ্য জাতির পিতাকে হত্যা করলো। জনগণের ক্ষমতা ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে বন্দি করা হয়েছিল। জনগণের ক্ষমতা এখন জনগণের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। ৯৬ সালের ক্ষমতায় এসে সবদিক থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম। নির্বাচনে আগে আমি গ্যাস বিক্রিতে রাজি হলাম না খালেদা জিয়া রাজি হল। কিন্তু ২০০১ এ নির্বাচনের পর আবার সারা বাংলাদেশে হত্যাযজ্ঞ শুরু হল। তারা বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে পাঁচ বার চ্যাম্পিয়ন করেছিল। ৭৫ পর অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল। সেটি আবার খালেদা জিয়ার আমলে বেড়ে গেল। আমি কমিউনিটি ক্লিনিক করেছিলাম। খালেদা জিয়া সেটি বন্ধ করে দিয়েছিল। ছাড়া দেশটাকে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদের দেশে পরিণত করেছিল। সারা দেশ থেকে লুটপাটের দেশ হিসেবে তৈরি করেছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে কোন হত্যা হলে বিচার চায়। কিন্তু ৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সহ সপরিবারে হত্যার পর চাইতে পারিনি। ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিচার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমাকে দেশে আসতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু কোন বাধাই আমাকে আটকাতে পারেনি। আমি মৃত্যুকে ভয় করে, দেশের মানুষের ভাগ্যে পরিবর্তন করব এই বিশ্বাস নিয়ে দেশে এসেছিলাম। দুর্গম এলাকা পাড়িয়ে দিয়েছি। দেখেছি বাংলাদেশের কি অবস্থা। আমার বাবা-মায়ের রক্ত দিয়ে দেশের ভাগ্য পরিবর্তন টা তারা করতে পেরেছে কিনা। স্বাধীনতা যাতে নষ্ট হয় সেই চেষ্টায় করেছিল কিছু লোক। একটা দেশ যখন স্বাধীন হয়। একটা দেশে যখন বিপ্লব হয়। একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ, আর রিজার্ভ নেই। সেই অবস্থায় যখন জাতির পিতা দায়িত্ব নিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ছাত্রলীগ সব সময় অগ্ৰনী ভূমিকা পালন করে। করোনার ধান কেটে কৃষকের ফসল তুলে দেয়। ১/১১ এর সময় ছাত্রলীগ বিরাট ভূমিকা পালন করেছে। তাই ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ জানাই। আমি ছাত্রলীগের হাতে খাতা কলম তুলে দিয়েছিলাম। আর জিয়াউর রহমান অস্ত্র তুলে দিয়েছিল। ছাত্রলীগ প্রত্যেকটা মানুষের পাশে দাঁড়ায়। এজন্য আমার বুকটা ভরে যায়। ছাত্রলীগকে অনুরোধ করব, বঙ্গবন্ধুর ডায়েরি থেকে নেওয়া, বই ‘আমার দেখা নয়াচীন, কারাগারের রোজ নামচা’ এই বইগুলো তোমরা পড়বে। এই বইয়ের মধ্যে প্রত্যেকটা জিনিস পাওয়া যাবে। সেজন্য বলি প্রত্যেককে এই বই পড়া উচিত। ছাত্রলীগের প্রত্যেককে ই সঠিক নেতৃত্ব করে তুলবে। সেটাই আমরা চাই।

তিনি বলেন, ধন সম্পদ টাকা করি কোন কিছু কাজে লাগে না। আমি চাই আমাদের দেশের ছেলে মেয়েরা অত্যন্ত মেধাবী। এই দেশকে এগিয়ে নেবার জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিত্ব গড়ে উঠবে ছাত্রলীগ থেকে। বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করে দিয়েছি। এখন নিজেরাই উদ্যোক্তা হতে পারবে।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়ন করেছি। একটা ব্যাংকের এমডি। বারবার চাপ আসতো ওই ব্যাংকের এমডি পদে না থাকতে দিলে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দেবে। ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত একটা ব্যাংকের এমডি থাকা যায়। কিন্তু তার বয়স হয়ে যায় ৭০। তখন আদালতের দায়ে তিনি ব্যাংকের এমডি থাকতে পারেননি। এরপর পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। পরে আমি নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতি করব বলে ঘোষণা দিয়েছিলাম। তাই নিজ ঈশ্বর তাহলে পদ্মা সেতু করেছি। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই দাঁড়িয়ে বলেছিলেন আমাদের কেউ তাদের রাখতে পারবা না। আমাদের কেউ দাবিয়ে রাখতে পারেনি। আমরা চাইলে নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করতে পারি। সেটা করে দেখিয়েছি। মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেল করেছি। উপকৃত হচ্ছে দেশের মানুষ। আমরা সারাদেশে রাস্তাঘাট করিতেছি যাতে একটা জেলার মানুষ অন্য জেলায় খুব সহজে যাতায়াত করতে পারে। ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে। আমরা আড়াই কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ১০০ টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। সারাদেশে ডিজিটাল ওয়াইফাই কানেকশন করেছি। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি। বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। করোনার সময়ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীল রাখতে চেষ্টা করেছি। যারা এই উন্নয়ন দেখে না তাদেরকে বলব 10 টাকার টিকিট কেটে গিয়ে চোখ দেখিয়ে আসেন। আমিও সেখানে চোখ দেখাতে যাই। তারা হাওয়া ভবন খুলে হাওয়া খেতে পারছে না বলেই তাদের যত দুঃখ। সমাজের কোন অংশই পিছে থাকবে না সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আমাদের লক্ষ্য প্রতিটি জেলা উপজেলা ভূমিহীন গৃহহীন মুক্ত হবে। কোন মানুষই পিছনে থাকবে না সেই মান লক্ষণই আমরা কাজ করছি। স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা ৪১ সালের মধ্যে গড়ে তুলবো। পেনশন স্কিম করে দিয়েছি। যাতে একটা মানুষ নির্দিষ্ট বয়সের পরে পেনশন পান। কিন্তু পেনশন স্কিম নিয়ে নানা ধরনের বিভ্রান্ত করছে বিএনপি। আমি বলব কেউ যেন বিভ্রান্ত না হন। আজকে আমার একটাই লক্ষ্য দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমার কোনো ভয় নেই। বাংলাদেশের অগ্ৰযাত্রায় কেউ বাধা দিতে পারবে না।

তথ্যসূত্রঃসময়ের আলো

আরো পড়ুন

মতামত দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সর্বশেষ সংবাদসমূহ

বিশেষ সংবাদ