পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে...
শনিবার, জুলাই ২৭, ২০২৪

তিন মাসে আমদানি ব্যয় কমেছে ২৪ শতাংশ

ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
ডলার-সংকটের কারণে আমদানি ব্যয়ের লাগাম টানা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ১ হাজার ৪৭৪ কোটি ৯০ লাখ (১৪.৭৫ বিলিয়ন) ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করেছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ কম। তার পরও বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে আলোচিত সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ বাড়ছে না; উলটো কমছেই।

২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ১৯ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছিল। আমদানি কমায় বাণিজ্য ঘাটতিও বেশ খানিকটা কমে এসেছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮১ কোটি ৮০ লাখ (১.৮২ বিলিয়ন) ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭৬ শতাংশ কম। ২০২২-২৩ অর্থবছরের এই তিন মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৭৫৭ কোটি ৬০ লাখ (৭.৫৭ বিলিয়ন) ডলার।

এই বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ১২ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার আয় করেছেন রপ্তানিকারকরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেশি। গত বছরের এই তিন মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে ১১ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছিল। এ হিসাবেই চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ কমে ১ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। ১৭ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষ হয়েছিল। তার আগের অর্থবছরে (২০২১-২২) অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে এই ঘাটতি ৩৩ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যাল্যান্স অব পেমেন্ট) উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৯ কোটি ২০ লাখ ডলার। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের এই তিন মাসে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচকে ৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি ছিল।

আমদানি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ১৮ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারের বিশাল ঘাটতি নিয়ে শেষ হয়েছিল ২০২১-২২ অর্থবছর। এর আগে কখনোই কোনো অর্থবছরে ব্যাল্যান্স অব পেমেন্টে এত ঘাটতি দেখা যায়নি।

আমদানি কমায় গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই ঘাটতি ৩৩৩ কোটি (৩.৩৩ বিলিয়ন) ডলারে নেমে এসে অর্থবছর শেষ হয়েছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যাল্যান্স অব পেমেন্টে ঘাটতি ছিল ৪ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ২০২১ সালের আগস্ট থেকে আমদানি ব্যয় বাড়তে শুরু করে। পুরো অর্থবছরে সেই উল্লম্ফন দেখা যায়। শেষ পর্যন্ত ৩৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে ২০২১-২২ অর্থবছর শেষ হয়।

ঐ অর্থবছরে রপ্তানি আয়েও উল্লম্ফন হয়েছিল; ৩৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। কিন্তু আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক রেমিট্যান্স কমেছিল ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ। সে কারণেই ব্যাল্যান্স অব পেমেন্টের ঘাটতি চূড়ায় উঠেছিল।

বেশ কয়েক বছর পর ২০২০-২১ অর্থবছরে লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতিতে পড়ে বাংলাদেশ। প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি নিয়ে শেষ হয়েছিল ঐ বছর। তার আগে ৯ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলারের বড় উদ্বৃত্ত নিয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষ হয়েছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে উদ্বৃত্ত ছিল ৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার। সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে (ওভারঅল ব্যাল্যান্স) ঘাটতি কমেছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এই সূচকে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ৩ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার।

তথ্যসূত্রঃইত্তেফাক

আরো পড়ুন

মতামত দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সর্বশেষ সংবাদসমূহ

বিশেষ সংবাদ