নিজস্ব প্রতিবেদক, (ফুলছড়ি) গাইবান্ধা:
৮ মে বুধবার গাইবান্ধার ফুলছড়ি ও সাঘাটা এ দুই উপজেলায় প্রথম ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার (০৭ মে) দুপুরে সহকারি রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে নির্বাচনি সরঞ্জামাদি কেন্দ্রগুলোতে নিয়ে যাওয়া শুরু হয়েছে। এছাড়া কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে বুধবার ভোটের দিন সকালে সমতলের কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট পেপার পৌছে দেয়া হবে। এছাড়া দুর্গম চরাঞ্চলের কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচনি সরঞ্জামাদির সাথে ব্যালটপেপারও নিয়ে যাবেন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের জন্য সকল ধরণের প্রস্ততি নেয়া হয়েছে বলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সুত্রে জানা গেছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফুলছড়ি উপজেলার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের নির্বাচনী সরঞ্জাম বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে ফুলছড়ি উপজেলার ৬০টি কেন্দ্রের ২৯৮টি স্থায়ী এবং অস্থায়ী ১৭টি সহ মোট ৩১৫টি ভোটকক্ষে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে সমতলে ৩০টি এবং চরাঞ্চলে ৩০টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এসব ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের ভোটগ্রহনের দায়িত্ব পালন করবেন ৬০ জন প্রিসাইডিং, ৩১৫ জন সহকারী প্রিসাইডিং এবং ৬৩০ জন পোলিং অফিসার। এ উপজেলায় ১ লাখ ২৬ হাজার ৪০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের অপেক্ষায় রয়েছেন। এরমধ্যে পুরুষ ৬২ হাজার ৯৭১ জন ও নারী ৬৩ হাজার ৬৯ জন। ফুলছড়িতে চেয়ারম্যান পদে ২ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ৬ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্বিতা করছেন। এ উপজেলায় বিদ্যুৎবিহীন ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৭টি এবং ৪৬টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ।
অন্যদিকে দশটি ইউনিয়ন নিয়ে সাঘাটা উপজেলার ১০৩টি কেন্দ্রের ৫৮৪টি স্থায়ী এবং অস্থায়ী ৭৭টি সহ মোট ৬৬১টি ভোটকক্ষে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে সমতলে ৯৯টি এবং চরাঞ্চলে ৪টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এসব ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের ভোটগ্রহনের দায়িত্ব পালন করবেন ১০৩ জন প্রিসাইডিং, ৬৬১ জন সহকারী প্রিসাইডিং এবং ১ হাজার ৩২২ জন পোলিং অফিসার। এ উপজেলায় ২ লাখ ৪১ হাজার ৭১২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের অপেক্ষায় রয়েছেন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৩ জন, নারী ১ লাখ ২১ হাজার ৫৯ জন। সাঘাটা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন মনোনয়ন ফরম জমা দেন। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে দু’জন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিলে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সামশীল আরেফিন টিটুকে সাঘাটা উপজেলা পরিষদ চেয়াম্যান নির্বাচিত ঘোষনা করে এক গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্বিতা করছেন। এ উপজেলায় বিদ্যুৎবিহীন ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৪টি এবং ৩৮টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তার মো. আব্দুল মোত্তালিব বলেন, নির্বাচনে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষতার সাথে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি নির্বাচনি এলাকার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ প্রতিরোধ ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং স্ট্রাইকিং ফোর্সকে দিক নির্দেশনা প্রদানের জন্য ১৭ জন বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। নির্বাচনকালীন সময়ে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য বিজিবি’র ৬ প্লাটুন সদস্য, র্যাবের ০২ টি করে মোট ৪ টি টিম, পুলিশ ও ব্যাটালিয়ন আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও নির্বাচনী এলাকায় ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
তিনি বলেন, এরআগে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের নিয়োগ প্রদান এবং তাদের সকল ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। নির্বাচনকালীন সময়ে আগ্নেয়াস্ত্র পরিবহন ও প্রদর্শন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নির্বাচনী পরিবেশ পর্যবেক্ষণে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও সম্মানীত নাগরিকদের সমন্বয়ে ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে।
বুধবার (০৮ মে) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে এক টানা ভোট গ্রহন চলবে।