পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে...
সোমবার, নভেম্বর ১১, ২০২৪

আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’

ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপটি আরো ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। তখন এটির নাম হবে মিধিলি।

আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এটি অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বৃহস্পতিবার সকালে গণমাধ্যমকে বলেন, আগামীকাল (শুক্রবার) ভোর নাগাদ গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্বে বাংলাদেশের দিকেই এগোচ্ছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এটি শনিবার (১৮ নভেম্বর) শেষ রাত থেকে সকাল নাগাদ বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তবে এটি কখন আঘাত হানবে তা এর বডির গতির ওপর নির্ভর করে।

এটি খুলনা ও বরিশালের মাঝখান দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, তবে এটি যে কোন সময় গতিপথ পরিবর্তনও করতে পারে। এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে মিধিলি। এটি একটি সাধারণ সাইক্লোন হবে। এটি খুব দ্রুত ঘনীভূত হয়েছে। অল্পসময়ের মধ্যে লঘুচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এবং এটি এগোনোর গতিও বেশি। শুক্রবার সকালের মধ্যে এটি ঘূর্ণিঝড়ের পরিণত হলে, পরবর্তী ১৮ ঘণ্টার মধ্যে তা উপকূল অতিক্রম করতে পারে। গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে সতর্ক সংকেত বাড়বে। সংকেত বেড়ে পাঁচ, ছয়, সাত পর্যন্ত যেতে পারে।

ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানী আনন্দ কে দাস জানিয়েছেন, গভীর নিম্নচাপটি শুক্রবার সকাল নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। আর এটি ওইদিন বিকেলে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এক্ষেত্রে ঝড়টি বাংলাদেশের মোংলা ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার মাঝ দিয়ে স্থলভাগে ওঠে আসতে পারে।

এদিকে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ০৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত (পুনঃ:)০৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝোড়ো হওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ সময় সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে বলেও পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। শনি এবং রোববারও বৃষ্টির প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

এর আগে গত মাসে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ এর সৃষ্টি হয়। এটি গত ২৪ অক্টোবর কুতুবদিয়ার কাছ দিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করে।

প্রসঙ্গত, বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) অধীন জাতিসংঘের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের ১৩ দেশের (বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, সৌদি আরব ও ইয়েমেন) আবহাওয়াবিদদের সংস্থা এস্কেপ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়ে থাকে।

তথ্যসূত্রঃসময়ের আলো

আরো পড়ুন

মতামত দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সর্বশেষ সংবাদসমূহ

বিশেষ সংবাদ