ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্বচ্ছ করতে যা যা দরকার, সবকিছু করছে সরকার। বিএনপি নির্বাচনে আসুক। দেখি কার কত জোর। নির্বাচন অবাক সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দেব। নির্বাচন কমিশন আবার সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে। তবে কেউ নির্বাচন বানচালের চেষ্টাও করবেন না। নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে আমি ছাড়বো না।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় তিনি এ কথা বলেন।
যারা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তাদের স্বাগত জানাই। যারা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি তারাও আশা করি সিদ্ধান্ত নেবেন। দেশবাসী ভোটাধিকার আত্মবিশ্বের সঙ্গে প্রয়োগ করবেন। আমি আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বলছি আপনারা সবাই নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। তারপরেও জনগণের ইচ্ছা যাকে খুশি তাকে ভোট দেবেন।
তিনি বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার ও ভাতের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করেছে। অধিকার আদায়ের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংগ্রাম করে গেছে। আর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েই আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী জীবন দিয়েছে। তৃণমূল পর্যন্ত সব সুবিধা দেওয়ার কারণে দেশের মানুষ এখন একটা সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখে। নৌকা মার্কা বাংলাদেশের জনগণকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। নৌকা মার্কা থাকলে জনগণের শান্তি ও সমৃদ্ধি হয়। তাই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের প্রার্থীদেরকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন।
এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। এছাড়া অন্য সদস্যদের মধ্যে আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, কাজী জাফর উল্ল্যাহ, রমেশ চন্দ্র সেন, ওবায়দুল কাদের, মো. রশিদুল আলম ও ডা. দীপু মনি উপস্থিত রয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরই এদেশে হত্যার রাজনীতি শুরু হয়। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়, গণতন্ত্রের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। ক্ষমতা দখলকারীরা উর্দি খুলে হঠাৎ রাজনীতিবিদ হয়ে যায়। জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করেই সংবিধান স্থগিত করে মার্শাল ল জারি করে। হ্যাঁ/না ভোটের আয়োজন করে। সে সময় ভোটের না বাক্স খুঁজেই পাওয়া যায়নি। তারা গণতন্ত্রের নামে জনগণকে ধোঁকা দিয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আজ আন্তর্জাতিকভাবে অনেক দেশ কথা বললেও যখন মিলিটারি ডিক্টেটররা মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ন করেছিল তখন তাদের চেতনা কোথায় ছিল? ভোটচুরির অপরাধে খালেদা জিয়াকে ১৯৯৬ সালের ৩০ মার্চ পদত্যাগ করতে হয়েছে।
সরকারপ্রধান বলেন, একসময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে থাকা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করতে আওয়ামী লীগ সরকার আইন করে দিয়েছে। এতে ৮২টি সংশোধনী এনে অবাধ নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের উপযোগী করা হয়। সেই আইনের অধীনে এখন দেশে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রজন্মের পর প্রজন্ম যাতে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে সেটি করে দেওয়ার জন্য কাজ করছি। কিন্তু ২০১৩ ও ১৪ সালে বিএনপি অগ্নি সন্ত্রাসের কারণে পোড়া মানুষগুলো বিকৃত চেহারা নিয়ে কী কষ্টে জীবন যাপন করে আসছেন। প্রায় ৩০০০ এর উপর মানুষ আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে। ৫০০ স্কুল পুড়িয়ে দিয়েছে। এই সমস্ত ধ্বংসযজ্ঞ করেও তারা ইলেকশনে আসেনি। আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। সেটা জেনেই তারা ইলেকশনে না আসে ইলেকশন বানচাল করার চেষ্টা করছে। সারাদেশে যাতে অল্প পয়সায় চলাফেরা করতে পারে সেজন্য রেললাইন করে দিয়েছি। সেই রেললাইনে তারা উপড়ে ফেলেছে। ট্রেনে আগুন দিয়েছে। তারা যদি নির্বাচন থেকে সরে যায় যেতে পারে। কিন্তু তারা নির্বাচনে না এসে অগ্নিসন্ত্রাসী করছে। যারা অগ্নি সন্ত্রাস করবে তাদের যেখানেই পাওয়া যাবে দেশবাসীকে বলবো তাদের ধরিয়ে দিন।