ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে চলমান সংঘাত নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে দেশটি কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি ইউ মিন্ট সুই। ক্ষমতাসীন সামরিক পরিষদের এক জরুরি সভায় এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। খবর বিবিসির
দেশটির উত্তরাঞ্চলে শান প্রদেশে তিনটি সশস্ত্র বাহিনী একত্রিত হয়ে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়ছে। সম্প্রতি তারা বেশ কয়েকটি সেনা ফাঁড়ি গুড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়া চীনের সাথে গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিংও দখলে নিয়েছে বিদ্রোহী বাহিনী। প্রতিবেশী দেশের সাথে ব্যবসায়ের জন্য এই স্থলপথ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে দমন করেছে জান্তা সরকার। তবে দেশটির উত্তরাঞ্চলে যেন দুর্বল হয়ে পড়েছে সামরিক বাহিনী।
গত ৭ নভেম্বর বিদ্রোহী জোটটি সামরিক বাহিনীকে হটিয়ে শান প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সামরিক সরঞ্জাম, অস্ত্র ও সামরিক পোস্ট। এরপরই ওই এলাকায় বোমা বর্ষণের জন্য যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে জবাব দেয় সামরিক বাহিনী। অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা দখলের পর দেশটির জেনারেলদের জন্য এই আক্রমণ সবচেয়ে গুরুতর পরীক্ষা বলে মনে করা হচ্ছে।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রপরিচালিত গ্লোবাল নিউ লাইট অব মায়ানমারের খবরে বলা হয় রাষ্ট্রপতি ইউ মিন্ট সুই বলেছেন, সরকার যদি সীমান্ত অঞ্চলে সংঘটিত ঘটনাপর কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে না পারে, তাহলে দেশটি বিভিন্ন অংশে বিভক্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী জনগণের নির্বাচনী রায় বানচাল করে দেশের শাসনক্ষমতা নেয়। নিজেদের নাম রাখে তারা ‘স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল’। প্রায় তিন বছর ধরে গণতন্ত্রপন্থীরা এই কাউন্সিলের বিরুদ্ধে লড়ছে। ইতিমধ্যে এই সংগ্রামে প্রায় ১৪ হাজার রাজনৈতিক কর্মী গ্রেফতার হয়েছে।
প্রথম বছর এই প্রতিবাদ নির্বাচিত অং সান সু চির সরকারকে কাজ করতে দেওয়ার দাবিতে অহিংস চরিত্রের মিছিল-সমাবেশে সীমিত ছিল। ২০২১ সালের শেষ দিক থেকে আন্দোলন পুরোদস্তুর সশস্ত্র রূপ নিয়েছে। মিয়ানমারে আগে থেকেই শান, কারেন, চিন, কাচিন, আরাকানসহ বিভিন্ন অঞ্চলে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে বিভিন্ন জাতিসত্তার সশস্ত্র সংগ্রাম চলছে।
২০২২ সাল থেকে খোদ মূল জনগোষ্ঠী বার্মার তরুণেরাও অস্ত্র হাতে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নামলে এখন প্রায় সব অঞ্চলে গৃহযুদ্ধ চলছে। অক্টোবরেও দুই-তিন দিনের লড়াইয়ে শান এলাকায় জান্তা অনেক সৈন্য ও অস্ত্র হারায়। গেরিলাদের সেই অভিযান এখন পর্যন্ত চলছে।