পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে...
মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪

বাজেটে থাকছে না থোক বরাদ্দ

ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কোনো প্রকারের থোক বরাদ্দ না রাখার নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর নিজস্ব আয়ের ভিত্তিতে ব্যয় নির্ধারণ করতেও বলা হয়েছে।

অর্থ বিভাগের বাজেট বাস্তবায়নের প্রক্ষেপণ প্রণয়নের নির্দেশনায় এসব বিষয় বলা হয়েছে। প্রণীতব্য এ বাজেট প্রস্তাব আগামী ২৯ এপ্রিলের মধ্যে অর্থ বিভাগের বাজেট অনুবিভাগ (১ ও ২), পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগ, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, বাজেটে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়/বিভাগকে সরকারের কৌশলগত উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়ক হয়, তেমন সুনির্দিষ্ট কার্যক্রমের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে এবং সাধারণভাবে বাজেটে কোনো ধরনের থোক বরাদ্দ প্রস্তাব করা যাবে না।

মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামো পদ্ধতির আওতাভুক্ত সব মন্ত্রণালয়/বিভাগকে বাজেট প্রণয়নের দ্বিতীয় পর্যায়ে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বিস্তারিত বাজেট প্রাক্কলন এবং একই সঙ্গে পরবর্তী ২০২৫-২৬ ও ২০২৬-২৭ অর্থবছরের প্রক্ষেপণ প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।

এতে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় পর্যায়ের বাজেট প্রণয়নে সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে ত্রিপক্ষীয় (অর্থ বিভাগ-পরিকল্পনা কমিশন-সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও প্রতিষ্ঠান) সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজস্ব ও প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা এবং ব্যয়সীমার আলোকে বিস্তারিত বাজেট প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ প্রয়োজনে সংশোধন ও পুনর্নির্ধারণ করতে হবে।

এতে আরও বলা হয়, সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রণীত বাজেট কাঠামো ইতিমধ্যে অর্থ বিভাগ, পরিকল্পনা কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় সভায় পর্যালোচনা করা হয়েছে এবং ওই সভার পর্যবেক্ষণের আলোকে একটি সম্মত বাজেট কাঠামো প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয়ের প্রাক্কলন এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেন তা মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত ব্যয়সীমার মধ্যে সংকুলানযোগ্য হয়। ত্রিপক্ষীয় সভায় আলোচনার ভিত্তিতে যে ব্যয়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে, ওই ব্যয়সীমাই সর্বোচ্চ।

নির্দেশনায় আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বিস্তারিত বাজেট প্রাক্কলনের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোকে চারটি নীতি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে-মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোতে বর্ণিত কৌশলগত উদ্দেশ্য এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সমন্বয় করবে।প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, নির্বাচনি ইশতেহার, ব-দ্বীপ পরিকল্পনা এবং মন্ত্রণালয়/বিভাগের নিজস্ব নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত সরকারের নীতি ও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা এবং মধ্যমেয়াদি লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জনে সক্ষম হয়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে সরকারের মৌলিক নীতিনির্ধারণী দলিলগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দারিদ্র্য নিরসন, নারী ও শিশু উন্নয়ন, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় সহায়ক কার্যক্রমে বরাদ্দ বাড়াতে সক্ষম হয় এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠী এবং নারী ও শিশু উন্নয়নে প্রদেয় সেবার মান ও পরিমাণ বাড়ে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির সঙ্গে পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় বাড়ার সামঞ্জস্য রাখা, যাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর বর্তমান কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা যায়। মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর বাজেট বরাদ্দের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।

সরকারি অনুদানে পরিচালিত স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোর বরাদ্দ নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থার চলতি অর্থবছরের নিজস্ব আয় ও আয়ের উৎসগুলো পর্যালোচনা করতে হবে। ত্রিপক্ষীয় সভায় সম্মত প্রাক্কলিত ও প্রক্ষেপিত আয় সংশ্লিষ্ট অর্থবছরে দেখাতে হবে। নিজস্ব আয়ের অর্থ বাদ দিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থার জন্য ব্যয়সীমা/সরকারি অনুদানের পরিমাণ নির্ধারণ করে তার ভিত্তিতে বাজেট প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ প্রণয়ন করতে হবে।

যেসব মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্য প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিবহির্ভূত স্কিমের জন্য বরাদ্দ রয়েছে শুধু তাদের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রাক্কলন এবং ২০২৫-২৬ ও ২০২৬-২৭ অর্থবছরের বাজেট প্রক্ষেপণ পুনরায় প্রণয়ন/সংশোধনের জন্য ফরম ৮ (খ-১) ব্যবহার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রাক্কলনে অননুমোদিত স্কিমের জন্য কোনো বরাদ্দ প্রস্তাব করা যাবে না। সংশ্লিষ্ট স্কিমের সব ব্যয় বিস্তারিত অর্থনৈতিক কোড অনুযায়ী প্রদর্শন করতে হবে। তবে প্রকল্প দলিলে অন্তর্ভুক্ত নেই এমন কোডে কোনো বরাদ্দ এন্ট্রি করা যাবে না। এ ছাড়াও ২০২৪-২৫ অথবা ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সমাপ্য কোনো কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ পরবর্তী অর্থবছরের প্রাক্কলন/প্রক্ষেপণে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রাক্কলন/প্রক্ষেপণ প্রণয়নের ক্ষেত্রে অনুসরণীয় সাধারণ নীতিমালা : বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রাক্কলন/প্রক্ষেপণ প্রণয়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং অধীনস্থ অধিদফতর/সংস্থা অর্থ বিভাগে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় সভায় নির্ধারিত মানদণ্ডের ভিত্তিতে প্রকল্পওয়ারি বরাদ্দ পর্যালোচনা এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে পুনর্নির্ধারণ করতে পারবে। তবে এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য প্রদত্ত মোট এডিপি ব্যয়সীমা কোনোভাবেই অতিক্রম করা যাবে না। উল্লেখ্য, মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্য প্রতিষ্ঠানকে প্রদত্ত ব্যয়সীমার মধ্যে বৈদেশিক ঋণ/অনুদান (ডিপিএল/আরপিএল), নগদ বৈদেশিক মুদ্রা ইত্যাদি বাবদ ব্যয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বৈদেশিক ঋণ/অনুদান, নগদ বৈদেশিক মুদ্রা ইত্যাদি ব্যয় বিবেচনা করে প্রকল্পের প্রাক্কলন/প্রক্ষেপণ প্রস্তুত করতে হবে। এ বাবদ ব্যয়সীমার অতিরিক্ত কোনো অর্থ বরাদ্দ প্রদান করা হবে না। কোনো প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ নির্ধারণের সময়ে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন ওই প্রকল্পের জন্য অনুমোদিত মোট প্রকল্প ব্যয় এবং মেয়াদ অতিক্রান্ত না হয়।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে নতুন প্রকল্প অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রস্তাব পরীক্ষা করে পরিকল্পনা কমিশন প্রচলিত নিয়মে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রাক্কলন : ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপিভুক্ত প্রকল্পের ব্যয়ের প্রকল্প দলিলে অন্তর্ভুক্ত নেই এমন অর্থনৈতিক কোডের বিপরীতে বরাদ্দ প্রদর্শন থেকে বিরত থাকতে হবে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রাক্কলনে অননুমোদিত প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। তবে ২০২৫-২৬ এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরের প্রক্ষেপণে অনুমোদিত সব প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রাখতে হবে। এ ছাড়া বৈদেশিক ঋণ/অনুদান প্রাপ্তির সুবিধার্থে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে নীতিগতভাবে অন্তর্ভুক্তিযোগ্য প্রকল্পের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের অধীনস্থ স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা/রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান/বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে সরকারি অর্থায়নে উন্নয়ন বাজেটভুক্ত প্রকল্প/স্কিমের ক্ষেত্রে ফরম ৮ (খ-২) পূরণ করতে হবে।

পরিকল্পনা কমিশন ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের মতামত : অধিদফতর/সংস্থাগুলো নির্ধারিত তারিখের মধ্যে নিজ নিজ অধিদফতর/সংস্থার বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুমোদনের পর সংশোধিত/পুনর্নির্ধারিত প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করবে। মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বাজেট ওয়ার্কিং গ্রুপ সচিবালয় অংশসহ প্রাপ্ত প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ পরীক্ষাক্রমে সুপারিশ প্রণয়ন করবে। মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বাজেট ওয়ার্কিং গ্রুপের সুপারিশকৃত পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম ও সংশ্লিষ্ট সেক্টর ডিভিশনে প্রকল্পভিত্তিক বরাদ্দের ওপর মতামতের জন্য প্রেরণ করতে হবে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম ও সংশ্লিষ্ট সেক্টর ডিভিশন মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত প্রাক্কলন/প্রক্ষেপণের ওপর প্রকল্পভিত্তিক বরাদ্দ সম্পর্কিত মতামত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করবে। উল্লেখ্য, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ কেবল প্রকল্প সাহায্য বরাদ্দের বিষয়ে প্রকল্পভিত্তিক মতামত প্রদান করবে।

তথ্যসূত্রঃসময়ের আলো

আরো পড়ুন

মতামত দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সর্বশেষ সংবাদসমূহ

বিশেষ সংবাদ