ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসভিত্তিক শীর্ষ ডিজিটাল কনটেন্ট কোম্পানি স্পোর্টিকোর সমীক্ষায় ২০২৩ সালে শীর্ষ আয়কারী ১০০ অ্যাথলেট আটটি খেলা ও ২৫টি দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। গত বছর তারা সম্মিলিতভাবে ৫৪০ কোটি ডলার আয় করেছেন; এর মধ্যে ৪২০ কোটি ডলার এসেছে বেতন ও প্রাইজমানি থেকে আর ১২০ কোটি ডলার এসেছে মাঠ, কোর্ট কিংবা কোর্সের বাইরে থেকে। এ তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছেন পর্তুগিজ ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো শীর্ষ ১০০ অ্যাথলেটের তালিকায় নেই কোনো নারী। ২০২৩ সালে ২ কোটি ২৭ লাখ ডলার আয় করে শীর্ষ আয়কারী নারী ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ১৯ বছর বয়সী টেনিস তারকা কোকো গাফ। তিনি ২০২৩ সালে ইউএস ওপেন জয় করেন।
সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসেরে খেলা ৩৯ বছর বয়সী রোনালদো গত বছর মোট ২৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার (প্রায় ৩ হাজার ১৪ কোটি টাকা) আয় করেছেন। তিনি ক্লাব ও জাতীয় দল থেকে বেতন বাবদ ২১ কোটি ৫০ লাখ ডলার ও এনডোর্সমেন্ট থেকে ৬ কোটি ডলার আয় করেছেন। রোনালদোর আয়ে বড় প্রভাব ফেলেছে সৌদি লিগের কোটি কোটি ডলার। তার মতোই সাদিও মানে, রিয়াদ মাহরেজ, করিম বেনজেমা ও নেইমারের মতো ফুটবলারের আয়ও বাড়িয়ে দিয়েছে সৌদি পেশাদার লিগ।
এর পরই স্প্যানিশ গলফার জন রাম। গত বছর তিনি ২০ কোটি ৩০ লাখ ডলার আয় করেছেন। এর মধ্যে বেতন ও প্রাইজমানি বাবদ ১৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও এনডোর্সমেন্ট থেকে ২ কোটি ২০ লাখ ডলার আয় করেন তিনি।
আর্জেন্টাইন ফুটবল সুপারস্টার লিওনেল মেসির আয় হঠাৎ করেই অনেক নেমে গেছে। গত বছর তিনি রোনালদোর প্রায় অর্ধেক আয় করেন। ২০২২ সালে বিশ্বকাপ জয় করা এ তারকা ২০২৩ সালে আয় করেন ১৩ কোটি ডলার। এর মধ্যে বেতন ও প্রাইজমানি খাতে ৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার ও এনডোর্সমেন্ট থেকে ৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার আয় করেন তিনি। মেসির আয় পড়ে যাওয়ার বড় কারণ ইউরোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মিয়ামিতে নাম লেখানো। সর্বশেষ ফ্রান্সের প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) ক্লাবে তিনি যে পারিশ্রমিক পেতেন তার অনেক কমে তিনি ইন্টার মিয়ামিতে যোগ দিয়েছেন। এর প্রভাব পড়েছে তার মোট আয়েও।
১২ কোটি ৫৭ লাখ ডলার আয় করে তালিকার চারে অবস্থান করছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাস্কেটবল সুপারস্টার লেবরন জেমস। তিনি ৪ কোটি ৫৭ লাখ ডলার বেতন ও প্রাইজমানি থেকে এবং ৮ কোটি ডলার এনডোর্সমেন্ট থেকে পেয়েছেন।
তালিকার ৫ ও ৬ নম্বরে আছেন মেসির সাবেক দুই সতীর্থ কিলিয়ান এমবাপ্পে ও নেইমার। লেবরন জেমসের মতোই বর্তমানে পিএসজিতে খেলা এমবাপ্পে ১২ কোটি ৫০ লাখ ডলার আয় করেছেন। এমবাপ্পে ১০ কোটি ডলার আয় করেছেন প্রাইজমানি ও পারিশ্রমিক থেকে আর ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার আয় করেন এনডোর্সমেন্ট খাত থেকে। আর নেইমার ১২ কোটি ১০ লাখ ডলার আয় করেছেন। ব্রাজিলীয় সুপারস্টার ৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার আয় করেন পারিশ্রমিক আর প্রাইজমানি থেকে এবং ৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার পেয়েছেন এনডোর্সমেন্ট খাত থেকে। গত বছর জুলাইয়ে পিএসজি থেকে বিশাল অংকের বেতনে সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালে নাম লিখিয়েছেন নেইমার। বর্তমানে চোটের কারণে তিনি মাঠের বাইরে।
নেইমারের পর তালিকায় পাঁচজন এনবিএ ও যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ফুটবলের খেলোয়াড়। তারা হলেন স্টিফেন কারি (৯ কোটি ৮৯ লাখ ডলার), জিয়ান্নিস আন্তেতোকোম্পোস (৮ কোটি ৮৪ লাখ ডলার), কেভিন ডুরান্ট (৮ কোটি ৬৯ লাখ ডলার), প্যাট্রিক মোহামেস (৮ কোটি ৪৩ লাখ ডলার) ও লামার জ্যাকসন (৮ কোটি ২৫ লাখ ডলার)। স্পোর্টিকো।
তালিকার ১১ নম্বরে স্থান করে নিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে সৌদি আরবের আল-ইত্তিহাদে ঠিকানা গড়া ফরাসি তারকা করিম বেনজেমা। তিনি গত বছর ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার আয় করেছেন। কৃতী গলফার ররি ম্যাকিলরয় ৭ কোটি ৭৪ লাখ ডলার আয় করে ১৩ নম্বরে ও গলফের কিংবদন্তি টাইগার উডস ৭ কোটি ৭২ লাখ ডলার আয় করে তালিকার ১৪ নম্বরে রয়েছেন।
ম্যানচেস্টার সিটির উদীয়মান সুপারস্টার নরওয়ের আর্লিং হালান্ড ৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার আয় করে তালিকার ১৮ নম্বরে অবস্থান করছেন। তিনি ৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার পান বেতন ও প্রাইজমানি থেকে আর ১ কোটি ৮০ লাখ ডলার পেয়েছেন এনডোর্সমেন্ট খাত থেকে।
টেনিসে ২৪টি গ্র্যান্ড স্লাম জিতে যুগ্মভাবে রেকর্ডধারী নোভাক জোকোভিচ ৪ কোটি ৪৯ লাখ ডলার আয় করে টেনিস খেলোয়াড়দের মধ্যে ১ নম্বরে ও সামগ্রিক তালিকায় ৪৬ নম্বরে রয়েছেন। বর্তমান ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন স্পেনের কার্লোস আলকারাজ ৪ কোটি ২২ লাখ ডলার আয় করে তালিকার ৫৬ নম্বরে অবস্থান করছেন।
তালিকায় ১০০ জনের মধ্যে এশিয়ার একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ঠাঁই করে নিয়েছেন জাপানের বেসবল খেলোয়াড় শোহেই ওহতানি। তিনি ২০২৩ সালে আয় করেন ৭ কোটি ডলার। তালিকায় তিনি ১৬তম।
গত এক পঞ্জিকাবর্ষের আয় হিসাব করেছে স্পোর্টিকো। তাদের আগের র্যাংকিংটি করা হয়েছিল ২০২১ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের মের মধ্যবর্তী সময়ের তথ্য নিয়ে।
খেলোয়াড়দের বেতন ও প্রাইজমানির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সাইনিং, প্রণোদনা, প্লে-অফ ম্যাচ এবং অল-স্টার ম্যাচ থেকে প্রাপ্ত বোনাসগুলো।