ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণেযে অ্যাকশন নেওয়া দরকার সেটা নিতে হবে। শুধু হুমকি-ধামকি দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। তবে অ্যাকশন নিতে হবে কৌশল অবলম্বন করে। তিনি বলেন, আমাদের দেশের বাস্তবতায় সবকিছু ডান্ডা মেরে ঠাণ্ডা করা যায় না। আমাদের পজিটিভ অ্যাকশনে যেতে হবে। এজন্য যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে আমরা পজিটিভ অ্যাকশনে যাব। দেখুন, মিষ্টি কোথায় সব সময় চিড়ে ভিজে না। কথা যেভাবে বলতে হয়, সেভাবে বলতে হবে।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর ধানমণ্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হবে, এই সংসদের চ্যালেঞ্জ কী হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংসদ মঙ্গলবার বসবে। সংসদের চ্যালেঞ্জ জনগণের স্বার্থ। এখন আমাদের প্রায়োরিটি হচ্ছে দ্রব্যমূল্য। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা, সর্বোপরি বাজার নিয়ন্ত্রণ। এই বিষয়টা চ্যালেঞ্জ। সংসদ সদস্যরা জনগণের প্রতিনিধি। এই সমস্যাগুলি এখন জনগণের নিত্যদিনের সমস্যা। কাজেই এখন চ্যালেঞ্জ হবে এটাই।
ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের স্বার্থে আওয়ামী লীগ কোনো অপশক্তিকে সহ্য করবে না। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। আমরা পাশাপাশি কর্মসূচি করেছি কিন্তু গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি প্রকাশ্যে পুলিশ হত্যা করেছে। প্রধান বিচারপতির বাসা, হাসপাতাল এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে, যা দেশবাসী এখনো ভোলানি। আক্রান্ত হয়েও আক্রমণ করিনি। তবে দেশের স্বার্থে কোনো অপশক্তিকে সহ্য করব না।
বিএনপির হুমকি-ধামকিতে কারো কোনো ভ্রুপেক্ষ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। রাজপথের বিষয়ে জবাব রাজপথে দেব। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষ গণতন্ত্রের বিজয়ের পতাকা উড়িয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকারের ইতিহাস ডিঙিয়ে বিএনপি যে বিকৃত তথ্য বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর অপপ্রচার করে জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিল তাদের সে অপচেষ্টা সফল হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দেশের বিদেশে সসম্মানে উচ্চারিত একটি নাম।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খানকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মঈন খান সাহেবদের দল ৭৫’র বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্য দিয়ে তারপর ৩ নভেম্বর, একুশে আগস্ট নেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাইম টার্গেট করে হামলার মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছে, তারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজাকার, আল বদরের দল। গর্হিত বক্তব্য দেওয়ার জন্য মঈন খানকে ক্ষমা চাইতে হবে জাতির কাছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় মঈন খান ও তার দলের লোকজন কোথায় ছিল? তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়া পাকিস্তানি চর হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল কি না সেটাই আজকে প্রশ্ন। বাংলাদেশের প্রথম সরকার তথা মুজিবনগর সরকারের অধীনে নিয়মিত বেতন ভাতা ভোগ করতেন জিয়াউর রহমান। বিএনপি প্রমাণ করেছে যুদ্ধাপরাধীদের বিশ্বস্ত ঠিকানা হচ্ছে এই দল। বিএনপি এখনো সেই লিগ্যাসি বহন করে চলছে।
তিনি বলেন, একবার একেকটা নিয়ে বিএনপি অপপ্রচার করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে দেশের কারাগারগুলোতে সর্বমোট ১০ হাজারের মতো বন্দি আছে। অথচ তারা জাতিসংঘ ও মার্কিন কংগ্রেসমেনের কাছে অপপ্রচার করেছে। মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করে তাদেরকে দিয়ে বলাচ্ছে, যে বাংলাদেশে ২৫ হাজার বিএনপি নেতাকর্মী জেলে আছে, তাদেরকে মুক্তি দিতে হবে।
আমেরিকার নির্বাচন প্রসঙ্গে ওবায়দুল বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন জনপ্রিয়তায় সবচেয়ে এগিয়ে। তার বিরুদ্ধে একানব্বইটা মামলা রয়েছে। তিনি প্রতিনিয়ত মামলা ফেস করছেন। বাইডেন বলেছেন, আমেরিকার গণতন্ত্র রক্ষা করার জন্য আবার ইলেকশনে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্র রক্ষা করব। এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
স্থানীয় নির্বাচন থেকে দলীয় প্রতীক সরিয়ে দেওয়া এটা কি দলীয় কোন্দল নিরসনের জন্য নাকি যারা বিএনপির নির্বাচনে আসতে পারেনি তাদেরকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি যদি বলি কোন্দল নিরসনের জন্য আমাদের কৌশল নিতে হয়েছে। ইলেকশনে আমরা কৌশল নিয়েছি। স্বতন্ত্রদের ইলেকশন করতে দিয়েছি। যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিল তারা নির্বাচন করেছে। সে কৌশলের তো বিজয় হয়েছে।
তিনি বলেন, কালো পতাকা কর্মসূচির নামে আবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জানান দিচ্ছে বিএনপি। তাদের কালো পতাকা মিছিলের কোনো অনুমতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেয়নি, তাই বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখবে। আমি যতদূর জানি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে কালো পতাকা মিছিলের অনুমতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নিতে হবে। বেআইনিভাবে তারা কিভাবে করবে।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।