ছয়দফা নিউজ ডেস্ক:
রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র (এনপিপি) বাস্তবায়ন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলকে পৌঁছেছে। এই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের পারমাণবিক জ্বালানি (নিউক্লিয়ার ফুয়েল) আগামী সেপ্টেম্বরে দেশে আসবে। এরই মধ্যে প্রকল্প এলাকায় যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সোমবার গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশ সফররত রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ এমন মন্তব্য করেন।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুল্লির জন্য আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রাশিয়া থেকে ৫০ টন পারমাণবিক জ্বালানি বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য পারমাণবিক এই জ্বালানি সমুদ্রবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে আনবে রোসাটম। রোসাটমের মহাপরিচালক চলমান বাংলাদেশ সফরে প্রধানমন্ত্রীকে এই ইস্যূতে বিস্তারিত অবহিত করেছে। এছাড়া রোসাটমের মহাপরিচালক এই সফরে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর আগে চলে আসা পারমানবিক জ্বালানির সংরক্ষণ, কীভাবে এই জ্বালানিকে নিরাপত্তার সঙ্গে পাবনায় নিয়ে যাওয়া হবে, এসব বিষয়ে স্থানীয় পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইবেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সোমবার রোসাটমের মহাপরিচালকের সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শত বাধা অতিক্রম করে এগিয়েছে এবং এই কেন্দ্রের জন্য পরমাণু জ্বালানি সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে আসবে। রোসাটমের মহাপরিচালক প্রধানমন্ত্রীকে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের সার্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন এবং প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা করেন। এই সময় রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন নিয়েও আলাপ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ মহামারি এবং বৈশ্বিক সংকট সত্ত্বেও রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী প্রযুক্তি ও আর্থিক সহায়তার জন্য রাশিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠনে রাশিয়ার সমর্থন ও সহযোগিতার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা ভবিষ্যতেও রাশিয়ার সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সোমবার রোসাটমের মহাপরিচালকের সাক্ষাতের সময়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, অ্যাম্বাসেডর এট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ড. শহীদ হোসেন এবং রাশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান উপস্থিত ছিলেন।
বন্ধু প্রতিম রাষ্ট্র রাশিয়ার সহযোগিতায় বাংলাদেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে বিগত ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর রোসাটমের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয়এক্সপোর্টের সঙ্গে বাংলাদেশের পরমাণু শক্তি কমিশনের চুক্তি সই হয়। গত ২০১৭ সালের নভেম্বরের শেষ প্রান্তে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ওই সময় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুল্লির জন্য কংক্রিটের মূল স্থাপনা নির্মাণের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সেই লিখাচেভ সশরিরে রুপপুরে উপস্থিত ছিলেন। গত বছরের অক্টোবরেও বাংলাদেশ সরকালেও গণভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন রোসাটমের মহাপরিচালক।