পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে...
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ৫, ২০২৪

ইসরাইলে হামলার প্রস্তুতি ইরানের

মধ্যপ্রাচ্যে উচ্চ সতর্কতা ওয়াশিংটনের

ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার জবাবে ইসরাইলে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে তেহরান। যুক্তরাষ্ট্রকে এই সংঘাত থেকে ‘সরে থাকতে’ বলেছে তারা। এদিকে আগামী সপ্তাহে ইরান ইসরাইলে হামলা চালাতে পারে; এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন একজন মার্কিন কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, ‘আমরা উচ্চ সতর্কাবস্থায় আছি।’ অঞ্চলটিতে মার্কিন বাহিনী ও ঘাঁটিগুলোতেও হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা ওয়াশিংটনের। খবর সিএনএন, রয়টার্স ও ব্লুমবার্গের।

সোমবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের স্থানীয় সময় বিকাল প্রায় ৫টার দিকে ইসরাইলের বিমান হামলায় ইরানের কনস্যুলেট ভবন ধ্বংস হয়। এ হামলায় ইরানের ইসলামিক রেভুল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) কুদস ফোর্সের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদি ও তার ডেপুটি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ হাদি হাজরিয়াহিমিসহ বাহিনীটির আরও পাঁচ কর্মকর্তা নিহত হন বলে এক বিবৃতিতে আইআরজিসি জানিয়েছে। ইসরাইল অনেক দিন ধরেই নিয়মিতভাবে সিরিয়ায় ইরানের সামরিক স্থাপনা ও তাদের ছায়া বাহিনীগুলোর ওপর হামলা চালিয়ে আসছে, কিন্তু এই প্রথম ইরানি কূটনৈতিক কম্পাউন্ডে হামলা চালায় তারা।

মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রধান ‘ছায়া বাহিনী’ হিজবুল্লাহ। তারা জায়নবাদী রাষ্ট্র ইসরাইলকে সতর্ক করেছে যে, তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ইরানের প্রেসিডেন্টের রাজনীতি বিষয়ক ডেপুটি চিফ অব স্টাফ মোহাম্মদ জামশিদি সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, ওয়াশিংটনের কাছে পাঠানো এক লিখিত বার্তায় ইরান ‘যুক্তরাষ্ট্রকে (বেনিয়ামিন) নেতানিয়াহুর ফাঁদে পা না দিতে সতর্ক করেছে।’

ইরান বলেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আঘাত না পেতে একপাশে সরে থাকা।’ জামশিদি দাবি করেন, এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে মার্কিন লক্ষ্যগুলোতে আঘাত না হানার আহ্বান জানিয়েছে। ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ইরানের পাঠানো কথিত এই বার্তা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র কোনো মন্তব্য করেনি।

সংবাদমাধ্যম এনবিসি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই মার্কিন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন যেটি গুরুত্ব দিচ্ছে তা হলো কোনো হামলা হলে তা ইসরাইলের ভেতরে নির্দিষ্টভাবে সামরিক অথবা গোয়েন্দা লক্ষ্যস্থলগুলোতে হতে হবে, বেসামরিক নয়।’

দামেস্কে ইসরাইলের হামলার পর বাইডেন প্রশাসন বিরল এক পদক্ষেপ নেয়। ইরানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে তারা তেহরানকে জানায়, যুক্তরাষ্ট্র দামেস্কের কূটনৈতিক কম্পাউন্ডে ইসরাইলি হামলার সঙ্গে ‘জড়িত ছিল না’ এবং এ হামলার বিষয়ে আগাম কোনো খবরও তাদের কাছে ছিল না। ব্লুমবার্গ বলছে, এ থেকে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের বাহিনী ও ঘাঁটিগুলোকে সম্ভাব্য হামলা থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।

ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরান সাফ জানিয়ে দিয়েছে, চিরশত্রু ইসরাইলকে ‘চপেটাঘাত’ করবে তারা। তবে কখন এটি ঘটবে তা এখনও পরিষ্কার হয়নি। ইরান নিজেই সরাসরি ইসরাইলে আক্রমণ করবে না লেবাননের হিজবুল্লাহর মতো তাদের কোনো ছায়া বাহিনী দিয়ে হামলা চালাবে তাও স্পষ্ট নয়।

দামেস্কে ইরানি সামরিক কর্মকর্তাদের হত্যার পর তেহরানের সম্ভাব্য পাল্টা হামলা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে উচ্চ সতর্কাবস্থায় আছে ইসরাইল। এ পরিস্থিতিতে সশস্ত্র বাহিনী তাদের যুদ্ধ ইউনিটগুলোর সব ধরনের ছুটি বাতিল করেছে। আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিটগুলোতে সেনা সংখ্যা বৃদ্ধি করে সম্ভাব্য হামলা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়েছে।

ইসরাইলের প্রধান বাণিজ্যিক নগরী তেল আবিবে থাকা রয়টার্সের সাংবাদিকরা ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সেখানে জিপিএস পরিষেবা বিঘ্ন ঘটছে; শত্রুর সম্ভাব্য নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোনকে বিভ্রান্ত করতে সম্ভবত এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসারাল্লাহ বলেছেন, ইরান থেকে একটি জবাব আসছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। ‘আর তারপর, ইসরাইল কী আচরণ করবে (তার ভিত্তিতে) এই অঞ্চল একটি নতুন পর্বে প্রবেশ করবে,’ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে বলেছেন নাসারাল্লাহ।

আত্মগোপনে থাকা নাসারাল্লাহ মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের তথাকথিত প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর সমন্বিতভাবে কাজ করার বিষয়টিতে জোর দিয়েছেন। বলেছেন, ‘ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য হিজবুল্লাহ পুরোপুরি প্রস্তুত।’

গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই লেবাননের দক্ষিণ সীমান্তে ইসরাইলি বাহিনীগুলোর সঙ্গে প্রায় দৈনিকভিত্তিতে গোলাগুলি বিনিময় করছে হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা। তবে এসব সংঘর্ষে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী এ মিলিশিয়া বাহিনীটি তাদের ‘মূল অস্ত্র’ ব্যবহার করছে না বলে জানিয়েছে।

তথ্যসূত্রঃসময়ের আলো

আরো পড়ুন

মতামত দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সর্বশেষ সংবাদসমূহ

বিশেষ সংবাদ