ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলে ৭.৫ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। স্থানীয় সময় বুধবার সকাল ৭টা ৫৮ মিনিটে ১৫.৫ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর জেরে তাইওয়ান ও এর প্রতিবেশী দেশগুলোতে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়। পরে অবশ্য সেই সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়।
এ ছাড়া কমপক্ষে ৯টি ৪ বা তার বেশি মাত্রার আফটারশক দেশটিতে আঘাত হানে।
২৫ বছরের মধ্যে এটি তাইওয়ানের সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুসারে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল তাইওয়ানের হুয়ালিয়েন শহরের প্রায় ১৮ কিলোমিটার (১১ মাইল) দক্ষিণে। হুয়ালিয়েনে একাধিক ভবন আংশিকভাবে ধসে এবং হেলে পড়েছে।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রাজধানী তাইপেইতে অবস্থিত ভবনগুলো শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপছে। তাইওয়ানের পাহাড়ি অঞ্চলও শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, ভূমিকম্পে বিশাল ভূমিধস হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো জানা যায়নি।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর ফুটেজে দেখা গেছে, ধসে পড়া আবাসিক ভবন, বাড়ি ও স্কুল থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় সম্প্রচারকারী টিভিবিএস-এর ভিডিও অনুসারে, ভূমিকম্পে যানবাহনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইন্টারনেট মনিটরিং গ্রুপ ‘নেটব্লক’ অনুসারে, দ্বীপটি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং ইন্টারনেট বিভ্রাটের খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে প্রতিবেশী জাপানের কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে বলেছিল, ৩ মিটার পর্যন্ত সুনামির ঢেউ এর দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের বিশাল এলাকায় আঘাত হানতে পারে। তবে জাপানের আবহাওয়া সংস্থা পরে এই সতর্কতা তুলে নেয় এবং বাসিন্দাদের প্রায় এক সপ্তাহ পরবর্তী আফটারশকের জন্য সতর্ক থাকতে বলে।
ফিলিপাইনের সিসমোলজি এজেন্সিও ভূমিকম্পের পরপরই সুনামির সতর্কতা জারি করে। বাসিন্দাদের উঁচু স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানায়। প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি সতর্কীকরণ কেন্দ্র ভূমিকম্পের প্রায় দুই ঘণ্টা পর জানায়, সুনামির হুমকি এখন কেটে গেছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, চীনের দক্ষিণ-পূর্ব ফুজিয়ান প্রদেশের কিছু অংশে কম্পন অনুভূত হয়েছে। তাইপেইয়ের সিসমোলজি সেন্টারের পরিচালক উ চিয়েন ফু বলেছেন, ‘সমগ্র তাইওয়ান এবং উপকূলীয় দ্বীপগুলোতে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়… যা ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল।’ ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে তাইওয়ানে ৭.৬-মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ লোক মারা যায় এবং পাঁচ হাজার ভবন ধ্বংস হয়ে যায়। -সূত্র : বিবিসি