ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
দাম নিয়ন্ত্রণে এবার আরো ৬ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। বাজারে সরবরাহ বাড়ানোর জন্য এর আগে চার কোটি ডিম আদমানি করতে চারটি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেওয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরো ৬ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিষয়টি সময়ের আলোকে নিশ্চিত করেছে।
যত দ্রুত সম্ভব’ ডিম দেশে আনতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।
প্রথমে চারটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি এক কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। তারা ইতোমধ্যে ডিম আমদানির কার্যক্রম শুরু করেছে।
দেশে ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ার পর কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ডিম আমদানি করতে অনুমতি চেয়েছিল। বাণিজ্যমন্ত্রী এর আগে জানিয়েছিলেন যে বাজারে ডিমের দাম না কমলে আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। এরপর গত রোববার প্রথম ধাপে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডিম আমদানির এ অনুমতি দেয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তিনটি পণ্যের দাম বেঁধে দেয়। এসব পণ্য হলো ডিম, আলু ও দেশি পেঁয়াজ। প্রতিটি ডিমের বাজারমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ টাকা। তবে এই দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে না। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারিতে বেশি দামে কেনার কারণে তাঁরা সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি করতে পারছেন না।
ডিম আমদানির অনুমতি পাওয়া ছয় প্রতিষ্ঠান হলো- চিজ গ্যালারী, পপুলার ট্রেড সিন্ডিকেট, এম/এস রিপা এন্টারপ্রাইজ, এস এম করপোরেশন, বিডিএস করপোরেশন, মেসার্স জয়নুর ট্রেডার্স। প্রথম ধাপের যে চারটি কোম্পানিকে ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তারা হলো মীম এন্টারপ্রাইজ, প্রাইম এনার্জি ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড সাপ্লাইয়ার্স, টাইগার ট্রেডিং ও অর্ণব ট্রেডিং লিমিটেড।
ডিম আমদানি করার ক্ষেত্রে চারটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। এর প্রথমটি হলো এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লুমুক্ত দেশ থেকে ডিম আমদানি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, আমদানি করা ডিমের প্রতিটি চালানের জন্য রপ্তানিকারক দেশের সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের দেওয়া এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু ভাইরাস ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ামুক্ত সনদ দাখিল করতে হবে।
এ ছাড়া নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি করা যাবে না এবং সরকারের অন্যান্য বিধিবিধান প্রতিপালন করতে হবে—এমন দুটো শর্তের কথা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ গত সপ্তাহে জানিয়েছিলেন, ঠিক কবে ডিম আমদানি হবে, তা চার প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। তবে তাদের বলা হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব ডিম আমদানি করতে হবে। তিনি বলেন, যেহেতু ঋণপত্র খুলে আমদানি করতে হবে, সে ক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগতে পারে।
তপন কান্তি ঘোষ আরো বলেন, কোন দেশ থেকে ডিম আমদানি করতে হবে, সেটিও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। আমদানিকারকরাই ঠিক করবেন যে তারা কোন দেশ থেকে ডিম আমদানি করবেন।
তবে আমদানি করা ডিমের দাম কী হবে, তা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্যসচিব বলেন, বাজারে যেহেতু ডিমের খুচরা মূল্য ১২ টাকা করে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, তাই আমদানি করা ডিমও প্রতিটি ১২ টাকার বেশি দামে বিক্রি করা যাবে না।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে প্রতিদিন চার কোটি ডিমের চাহিদা রয়েছে। ডিমের ওই চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে এক দিনের চাহিদা পূরণ করা যায়, শুরুতে সেইসংখ্যক ডিম আমদানি করা হবে।
তবে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, প্রয়োজন হলে আরও ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। ডিমের বাজারে সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।