ছয়দফা নিউজ ডেস্ক:
বেলারুশের বিশেষায়িত সেনা ও ওয়াগনার যোদ্ধারা প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণে একসঙ্গে কাজ করছে। ছবি : বেলারুশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়
বেলারুশের অভ্যন্তরে ন্যাটো সদস্য দেশ পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে গ্রোডনো শহরের কাছেই সুওয়ালকি গ্যাপের (সংকীর্ণ ও কৌশলগত স্থল করিডর) দিকে ১০০-এরও বেশি ওয়াগনার সেনাকে অগ্রসর হতে দেখা গেছে।
শনিবার (২৯ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটা জানিয়ে পোলিশ প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাউইকি ওয়াগনার বাহিনীর গতিবিধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। খুব সম্ভব তারা (ওয়াগনার যোদ্ধারা) বেলারুশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পোশাক পরে তাদের ছদ্মবেশ নিয়ে অবৈধ অভিবাসীদের পোল্যান্ডে ঢোকানোর মাধ্যমে দেশটিকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করবে।’
এদিকে লিথুয়ানিয়ার উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর্নল্ডাস আব্রামাভিসিয়াসের শঙ্কা, খোদ ওয়াগনার যোদ্ধারাই অভিবাসীর ছদ্মবেশে ইইউভুক্ত দেশগুলোতে প্রবেশ করতে পারে।
এর আগেও বেলারুশে ওয়াগনার বাহিনীর উপস্থিতির বিষয়ে দক্ষিণ পোল্যান্ডের গ্লিউইসে এক অস্ত্র কারখানা পরিদর্শনের সময় মোরাউইকি বলেছিলেন, এমনটা বেলারুশের সঙ্গে তাদের সীমান্ত পরিস্থিতিকে আরও ভয়ংকর করে তুলছে।
এ ইস্যুতে গত শুক্রবার পোল্যান্ডের গভর্নিং পার্টির চেয়ারম্যান কাকজিনস্কি বলেন, ‘ওয়াগনার যোদ্ধারা বেলারুশে মজা করতে আসেনি। তারা বিভিন্ন সংকট তৈরি করতে সেখানে রয়েছে। প্রাথমিকভাবে তাদের লক্ষ্য পোল্যান্ড। তবে ওয়ারশও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে, যাতে ওয়াগনারের যেকোনো ধরনের উস্কানি ব্যর্থ হয়।’
পোল্যান্ড ও বেলারুশ সীমান্ত কয়েক বছর ধরেই একটি উত্তেজনাপূর্ণ জায়গা হয়ে উঠেছে। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা থেকে আসা বিপুল শরণার্থী এবং অভিবাসীরা বেলারুশ হয়ে পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ার মাধ্যমে ইইউভুক্ত দেশে প্রবেশ করতে চায়।
পোলিশ সরকার দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে, অভিবাসীদের ব্যবহার করে পোল্যান্ডসহ অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায় রাশিয়া ও বেলারুশ। এটিকে একধরনের হাইব্রিড যুদ্ধ উল্লেখ করে সীমান্তে উঁচু প্রাচীর নির্মাণ করেছে পোলিশ কর্তৃপক্ষ।
মোরাউইকি দাবি করেছেন, চলতি বছরেই বেলারুশ থেকে ১৬ হাজার বার সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টা করেছে অভিবাসীরা। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাদেরকে পোল্যান্ডে ঠেলে দিতে চেয়েছিলেন।
রাশিয়ায় ওয়াগনার বাহিনীর বিদ্রোহের পর লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্ততায় ওয়াগনার যোদ্ধারা দেশটিতে এসেছে। এরই মধ্যে বেলারুশের সামরিক বাহিনী ইউক্রেনে যুদ্ধের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই বাহিনীটির কাছ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ শুরু করেছে।