ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার মাধ্যমে বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া উচিত বলে মনে করেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বিএনপির ভোটে অংশ নেওয়া উচিত। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে আমি এই দল থেকেই নির্বাচন করব।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে মেজর হাফিজ এসব কথা বলেন। মেজর হাফিজের নেতৃত্বে নতুন দল হচ্ছে বলে গতকাল সোমবার বক্তব্য দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। সরকারি সংবাদ সংস্থা বাসস গতকাল এই খবর দিয়েছে। রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের একজন মন্ত্রী এমন বক্তব্য দিলেন, ফলে এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা চলছে।
এ ব্যাপারে আজ মেজর হাফিজের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আপাতত আমি রাজনৈতিক পরিস্থিতির খবর রাখতে পারছি না। কারণ, আমি শারীরিকভাবে খুব অসুস্থ। রাজনীতির খবর রাখার মতো শারীরিক অবস্থা আমার নেই।’
একই সঙ্গে মেজর হাফিজ বলেন, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে তখন রাজনীতির দিকে নজর দেব। যদি আমার শরীর সুস্থ থাকে।’ এ পর্যায়ে তিনি আরও বলেছেন, আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার মাধ্যমে বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া উচিত। আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা কে করবে, কীভাবে করবে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।
ঢাকায় গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার পর দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১২ জন জ্যেষ্ঠ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আট হাজারের বেশি নেতা-কর্মী পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে।
মামলা ও গ্রেপ্তার অভিযানের মুখে বিএনপি দুই দফায় পাঁচ দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালনের পর কাল বুধবার থেকে আবারও দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে। দলটি তাদের আন্দোলনের এই পর্যায়ে এবং নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের বিরুদ্ধে দল ভাঙার অভিযোগ তুলেছে।
গতকাল তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ ঢাকায় দলের এক সমাবেশে বলেছেন, অনেকেই লাইন ধরে আছেন তৃণমূলে (তৃণমূল বিএনপি) যোগ দেওয়ার জন্য। আর বিএনপির সাবেক মন্ত্রী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজের নেতৃত্বে আরও একটি দল হতে যাচ্ছে। তাঁরা শিগগিরই ঢাকায় কনভেনশন করবেন। সুতরাং বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও নেতাদের অংশগ্রহণ ঠেকাতে পারবে না। যদিও সরকারের একজন মন্ত্রীর এই বক্তব্যের ব্যাপারে বিএনপির নেতা মেজর হাফিজ বলেছেন, তিনি এখনো বিএনপিতে আছেন। বিএনপির জ্যেষ্ঠ একাধিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা প্রথম আলোকে বলেছেন, মেজর হাফিজ অনেক দিন ধরে তাঁদের দলে সক্রিয় নন। তিনি কী করছেন, তা তাদের জানা নেই।
বিএনপির ওই নেতারা অবশ্য উল্লেখ করেন, ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে হঠাৎ রাজধানীতে বিএনপির কিছু নেতা-কর্মী অবস্থান ও বিক্ষোভ করেছিলেন। এর নেতৃত্বে ছিলেন দলের দুই ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজ ও শওকত মাহমুদ। তাঁদের তখন কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল বিএনপি। সে সময় মেজর হাফিজের সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের সম্পর্কের টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছিল।
পরে মেজর হাফিজ সেই নোটিশের জবাব দিয়েছিলেন। অবশ্য বিএনপি তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তিনি দলের ভাইস চেয়ারম্যানের পদেই বহাল রয়েছেন।