পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে...
শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

সংরক্ষিত নারী এমপি নির্বাচনের পর মন্ত্রিসভা বড় হচ্ছে

১৪ দলীয় জোটের শরিক দল ও সংরক্ষিতদের থেকেও মন্ত্রী হতে পারেন আরও কয়েকজন

ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে গঠিত মন্ত্রিসভা শিগগিরই সম্প্রসারণ হতে যাচ্ছে। জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর ফেব্রুয়ারির শেষদিকে মন্ত্রিসভায় যুক্ত হতে পারেন আরও ৯-১০ জন। নতুন করে কাদের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে সে ব্যাপারে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। সংরক্ষিত নারী আসনের এমপিদের মধ্যে থেকে অন্তত এক থেকে দুজনকে মন্ত্রী করা হতে পারে। এ ছাড়া ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল ও টেকনোক্র্যাট কোটায় আরও কয়েকজন সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেতে পারেন বলে সরকারের বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। মন্ত্রিসভায় নতুন কারা অন্তর্ভুক্ত হবেন তা নিয়েও রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।

নতুন মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছেন টানা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ৩৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভায় প্রথমবারের মতো যুক্ত হয়েছেন ১৪ জন। এই তালিকায় স্থান পাননি বিদায়ি মন্ত্রিসভার ২৮ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী। বাদ পড়াদের মধ্যে রয়েছেন ১৪ জন মন্ত্রী, ১২ জন প্রতিমন্ত্রী ও দুজন উপমন্ত্রী। বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও বিভিন্ন সময়ে বেফাঁস মন্তব্যসহ মন্ত্রণালয়ে অনুপস্থিতি, দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা, অবৈধ সম্পদ অর্জন, স্বজনপ্রীতি ও সফলতার সঙ্গে কাজ করতে না পারায় বাদ পড়েছেন কেউ কেউ। এ ছাড়া নতুনদের জায়গা দিতে একাধিক মেয়াদে দায়িত্ব পালন করা কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকেও বাদ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বিদায়ি মন্ত্রিসভার আকার ছিল ৪৮ সদস্যের। নতুন ৯ বা ১০ জন যুক্ত হলে বর্তমান মন্ত্রিসভার আকার দাঁড়াবে ৪৬ বা ৪৭ জনে।

নতুন করে কারা আসছেন মন্ত্রিসভায় এ নিয়ে দলের ভেতরে-বাইরে চলছে বিভিন্ন আলোচনা। কর্মকর্তারা জানান, মন্ত্রিসভা গঠনের পুরোপুরি এখতিয়ার সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর হাতে। তিনি কাকে অন্তর্ভুক্ত করবেন এবং কাকে বাদ দেবেন সেটি তার এখতিয়ার। তবে মন্ত্রিসভায় বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে বেশিরভাগ নতুনদের স্থান দেওয়া এবং নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে মন্ত্রিসভা গঠনের বিষয়টি ইতিবাচক। তারা বলেন, ১১ জানুয়ারি ৩৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হওয়ার পর থেকেই বোঝা গিয়েছিল বর্তমান মন্ত্রিসভা পূর্ণাঙ্গ নয়। একাধিক মন্ত্রী জানান, ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সংরক্ষিত আসনে নারী এমপিদের মনোনয়ন ও নির্বাচন চূড়ান্ত হবে। এরপরই মন্ত্রিসভার আকার বাড়তে পারে। তাদের মতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের যে কাজের পরিধি ও কাজের চাপ সেই তুলনায় বর্তমান মন্ত্রিসভা অত্যন্ত ছোট। এ কারণেই সম্প্রসারণ করা হবে। তবে পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তের ওপর।

মন্ত্রীদের দফতর বণ্টনের পর কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। কর্মপরিধি বড় এমন মন্ত্রণালয়েও একজন করে দায়িত্বে রয়েছেন। বর্তমানে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কোনো মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী নেই। এ দুটি মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের দায়িত্বে রেখেছেন। এ ছাড়াও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় নিজের হাতে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যদিকে তথ্য মন্ত্রণালয়ে পূর্ণ মন্ত্রীর পদটি ফাঁকা রয়েছে। মন্ত্রীর যে অফিস কক্ষ সেটিও ফাঁকা রাখা হয়েছে। তাই নতুন কোনো পূর্ণ মন্ত্রীকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।

এ ছাড়া স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে একজন করে মন্ত্রী দায়িত্ব পালন করছেন। মন্ত্রিসভার আকার বড় করা হলে এসব মন্ত্রণালয়ে নতুন করে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে বিগত সরকার আমলে একজন মন্ত্রী এবং একজন প্রতিমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করলেও এবার একজন প্রতিমন্ত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই সেখানেও মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ দিয়ে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করা হতে পারে।

আলোচনা রয়েছে তথ্যমন্ত্রী হতে পারেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকার রমনা-পল্টন এলাকার এমপি আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। তিনি একাধিকবার সংসদ সদস্য হলেও এখনও পর্যন্ত মন্ত্রী হননি। প্রথম দফায় মন্ত্রিসভা গঠনের সময়েই তার নাম আলোচনায় ছিল। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী হতে পারেন সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী হতে পারেন সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান। সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় আসতে পারেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাতবারের সংসদ সদস্য মির্জা আজম, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং জাতীয় চার নেতার পরিবারের সদস্য, সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাছিমের ছেলে একাধিকবার নির্বাচিত এমপি তানভীর শাকিল জয়।

এ ছাড়া আলোচনায় রয়েছেন নতুন এমপি নির্বাচিত হওয়া প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মো. আবদুস সবুর, ড. সেলিম মাহমুদ ও ফেনী থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ নাসিমের নাম। নতুন মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট হিসেবে দুজনকে মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলের কাউকে মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি। তাই শরিক দল ও টেকনোক্র্যাট কোটায় আরও কয়েকজন আসতে পারেন সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায়।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গণমাধ্যমকে বলেছেন, মন্ত্রিসভা গঠন, সম্প্রসারণ বা রদবদল পুরোপুরিভাবে প্রধানমন্ত্রীর একক এখতিয়ার। কে কে মন্ত্রিসভায় আসবেন-এটি একান্তভাবেই প্রধানমন্ত্রী জানেন। সরকারের প্রয়োজনে মন্ত্রিসভার আকার বাড়তেও পারে।

তথ্যসূত্রঃসময়ের আলো

আরো পড়ুন

মতামত দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সর্বশেষ সংবাদসমূহ

বিশেষ সংবাদ