পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে...
বুধবার, ডিসেম্বর ১১, ২০২৪

মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ১৩ নভেম্বর জাতিসংঘে বৈঠক

ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
আগামী ১৩ নভেম্বর দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের অবস্থান জাতিসংঘে উপস্থাপন করবে বাংলাদেশ। জেনেভায় অবস্থিত জাতিসংঘের কেন্দ্রিয় সদরদফতরে সংস্থাটির মানবাধিকার কাউন্সিলের ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ’র (ইউপিআর) ৪৪তম অধিবেশনে মানবাধিকার প্রতিবেদন পেশ করবে বাংলাদেশ। আসন্ন অধিবেশনে চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিরোধীপক্ষের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের আটকের বিষয়ে বাংলাদেশের কাছে প্রশ্ন তুলতে পারে সদস্য রাষ্ট্রগুলো।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ইউপিআর অধিবেশনে নিজেদের মানবাধিকার প্রতিবেদন উপস্থাপন বিষয়ে এরই মধ্যে যথাযথ প্রস্তুতি শেষ করেছে বাংলাদেশ। এই বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ৬ টি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গত ৭ আগস্ট জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে প্রতিবেদনও জমা দেওয়া হয়েছে। সামনের ১৩ নভেম্বর বাংলাদেশের পক্ষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ৪৪তম ইউপিআর অধিবেশনে প্রতিবেদন পেশ এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রশ্নের জবাব দেবেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের ওই অধিবেশনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

ইউপিআর মূলত জাতিসংঘের মানবাধিকার ব্যবস্থার একটি অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার আওতায় বৈশ্বিক এই সংস্থাটির ১৯৩টি সদস্য রয়েছে। সকল সদস্যের নিজ নিজ দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রতি সাড়ে ৪ বছর অন্তর পর্যালোচনা করা হয়। পাশাপাশি মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দেওয়া হয়। ইউপিআর এর সুপারিশ মানা সদস্য রাষ্ট্রগুলোর জন্য বাধ্যবাধকতামূলক কোনো আইন না। তবে মানবাধিকার নিয়ে জাতিসংঘে যত ধরনের প্লাটফর্ম আছে তারমধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হচ্ছে ইউপিআর।

জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর জন্য ইপিআর মূলত সুক্ষ্ম একটি রাজনৈতিক অস্ত্র। বাংলাদেশ এর আগে ৩ বার ইউপিআর অধিবেশনে মানবাধিকার পরিস্থিতি উপস্থাপন এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলোর বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়েছে। বিগত ২০০৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ প্রথমবারের মত ইউপিআর অধিবেশনে অংশ নেয়। এরপর গত ২০১৩ সালের ২৯ এপ্রিল দ্বিতীয় বার এবং গত ২০১৮ সালের ১৪ মে তৃতীয় বারের মত বাংলাদেশ ইউপিআর অধিবেশনে অংশ নেয়।

কূটনৈতিক সূত্রে আরো জানা গেছে, বিগত ২০০৯ সালে ইউপিআর অধিবেশনে প্রথমবারের মত অংশ নেওয়া বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য মোট ৪২ সুপারিশ করা হয়। যার মধ্যে মৃত্যুদণ্ড বাতিল এবং সমকামিতা সংক্রান্ত এই ২ টি সুপারিশ বাদে বাংলাদেশ বাকিগুলো গ্রহণ করে। ২০১৩ সালে ইউপিআর অধিবেশনে দ্বিতীয়বার মত অংশ নেওয়া বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য মোট ১৯৬ সুপারিশ করা হয়। ওই বছরও মৃত্যুদণ্ড বাতিল এবং সমকামিতা সংক্রান্ত এই ৫টি সুপারিশ বাদে বাংলাদেশ বাকিগুলো গ্রহণ কর।

গত ২০১৩ সালের ইউপিআর অধিবেশনে জোরপূর্বক গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের যেকোনও অভিযোগ তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের পরামর্শ দেওয়া হয়, যা বাংলাদেশ গ্রহণ করে। এরপর গত ২০১৮ সালে ইউপিআর অধিবেশনে তৃতীয়বার মত অংশ নেওয়া বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য মোট ২৫১ সুপারিশ করা হয়। যার মধ্যে ৭৩টি সুপারিশ বাংলাদেশ গ্রহণ করেনি।

সৌদি সফরে যাওয়ার আগে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এই প্রতিবেদককে বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘ সদন মেনে চলে। আগামী ১৩ নভেম্বর জেনেভায় ইউপিআর অধিবেশনে আইনমন্ত্রী বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন। সেখানে আমিও অংশ নিব। এরই মধ্যে ইউপিআর অধিবেশনে যোগ দিতে আমরা যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছি।

তথ্যসূত্রঃসময়ের আলো

আরো পড়ুন

মতামত দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সর্বশেষ সংবাদসমূহ

বিশেষ সংবাদ