ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত ২৮ অক্টোবর পুলিশ কি অপরাধ করেছিল। এক পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে মেরেছে। আমি পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই। তারা সহনশীল ছিল। তারা কথায় কথায় বাসে আগুন দেয়। আমাদের দলের মেয়েদের নির্যাতন করেছে, এই সন্ত্রাসী বাহিনী। কতশত মানুষকে তারা পুড়িয়েছে। গাড়ি পুড়িয়েছে। সরকারি অফিস পুড়িয়েছে। তাদের আন্দোলন মানুষ খুন, পুড়িয়ে মারা।
তিনি বলেন, আগুন সন্ত্রাসের ধ্বংস জজ্ঞ বন্ধ না করলে কিভাবে করতে হয় আমরা জানি। যেখানে সন্ত্রাস করবে, আগুন দেবে। সেখানে পুড়িয়ে দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে। নৌকা মার্কায় মানুষ ভোট দেবে। আজকে উন্নয়ন শীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই এতো কিছু হয়েছে। আর ওরা ভোট চোর। তাঁরা যেন মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে তার জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
শনিবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর আরামবাগে মেট্রোরেল আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ উদ্বোধন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকাবাসীর জন্য মেট্রোরেল উপহার হিসেবে দিয়েছি। এতে সবাই নিরাপদে চলাচল করছে। আগে ২৫ হাজার লোক জাতায়াত করে। এখন মতিঝিল পর্যন্ত উদ্বোধন করলাম। ঢাকাবাসীর জন্য সময় বাঁচবে। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখবেন। আজকে হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করলাম।
শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকায় পানি ও বিদ্যুৎ সমস্যা ছিল। কিন্তু আজকে কোনো সমস্যা নেই। বিদ্যুৎ ও পানিতে অনেক খরচ হয়। তাই মিতব্যায়ি হবেন সবাই। ঢাকায় ডেংগু দেখা দিয়েছে। তাই সবাইকে সচেতন করতে হবে। ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগে ভাগ করে দিয়েছি। আওয়ামী লীগ জনগণের সেবায় কাজ করে। জনগণের জন্য কাজ করে। একটি দল বিএনপি ৭৫ এর পর ২১ বছর ক্ষমতায় ছিল। তারা কিছু করেনি। ৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় এলাম, দেখলাম খাদ্য ঘাটতি। দেশে কিছু নেই। পরে আমরা করেছি। যখন মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করি, তখন বিএনপি আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করে। তারা মানুষের কল্যাণে কোনো কাজ করেনি। ২১টা বছর এদেশের মানুষ ছিল অন্ধকারে। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল খালেদা জিয়া। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সেটি করেনি। এরা খুনিদের মদদ দেয়। দুর্নীতিতে ৫ বার চ্যাম্পিয়ান হয়েছিল তাদের আমলে। বার বার আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। আমার কাছে ক্ষমতা হলো জনগণের সেবা করা।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, জয় বাংলা স্লোগান তারা বন্ধ করেছিল। আজকে জয় বাংলা স্লোগান জাতীয় স্লোগান পরিনত হয়েছে। ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিল। কিন্তু আজকে এই ভানষটি আন্তর্জাতিক মর্যাদা পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বহুমুখী শিক্ষাকে আমরা ব্যবস্থা করেছি। মানুষের আয়ুস্কাল বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। পারিবারিক কার্ড করে দিয়েছি। গার্মেন্টসে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে তৃতীয় ধাপে মজুরি বেড়েছে। আওয়ামী লীগ জানে মানুষের দুঃখ দূর করতে। তাই কারখানা ভাঙচুর করে নিজের রুটি রুজির করা ঠিক নয়। যারা উস্কানি দেয় বিদেশে বসে, তারা যেখানে থাকুক ব্যাবস্থা নেয়া হবে। ওই কুলাঙ্গারকে বিদেশ থেকে ধরে আনা হবে। বিচার করা হবে। কেউ ঠেকাতে পারবে না। দলীয় নেতাকর্মীদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আগামী নির্বাচনে যাকে মনোনয়ন দেই, তাকে ভোট দেবেন। দেবেন কি না বলেন।
এসমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান তরুণ। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, ড. আব্দুর রাজ্জাক, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কর্নেল অব. ফারুক খান, এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, প্রচার সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, মুক্তি যুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মিনাল কান্তি দাস, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছাদুজ্জামান খান কামাল, সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাইদ খোকন প্রমুখ।