ছয় দফা নিউজ ডেস্ক:
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বলছে, গতকাল শনিবার ভোরের আগে মিয়ানওয়ালি শহরে অবস্থিত বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে জঙ্গিরা ৩টি উড়োজাহাজের ক্ষতি করেছে। একদিন আগেই দেশের অন্যান্য জায়গায় একাধিক হামলায় জঙ্গিরা ২২ ব্যক্তিকে হত্যা করে, যাদের বেশিরভাগই সৈনিক।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলাকারীরা ঘাঁটিতে প্রবেশের আগেই ৩ জন হামলাকারীকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা হত্যা করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে দুই পক্ষের সংঘাতে আরও ৬ জন জঙ্গি নিহত হয়। সেনাবাহিনী ‘জঙ্গি’ হামলাকে ব্যর্থ করার এবং ‘এই অবকাঠামো ও এতে অবস্থানরত মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত’ করার জন্য সেনাদের ‘দ্রুত ও কার্যকর প্রতিক্রিয়ার’ প্রশংসা করে।
সামরিক বাহিনী আরো বলেছে, “তবে, হামলার সময় ৩টি উড়োজাহাজ ও ১টি তেল বহনকারী ট্যাঙ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”
এই হামলার দায় নিয়েছে তেহরিক-ই-জিহাদ পাকিস্তান নামের একটি নব্য জঙ্গি সংগঠন। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই সংগঠনটি নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি বড় আকারের অভিযান চালিয়েছে। যার মধ্যে জুলাই মাসে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেলুচিস্তান প্রদেশের এক সামরিক ঘাঁটির বিরুদ্ধে হামলা অন্যতম। সেই হামলায় ১২ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হন।
শনিবার বিমানঘাঁটিতে অভিযান চালানোর এক দিন আগেই এই বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বেলুচিস্তান প্রদেশের গোয়াদার জেলায় এক সামরিক বহরে অতর্কিতে হামলা চালায়। এতে ১৪ জন সৈন্য নিহত হয়। এই জেলায় চীন-পরিচালিত একটি গভীর পানির সমুদ্র বন্দর রয়েছে, যা আরব সাগরের সঙ্গে সংযুক্ত।
বেলুচিস্তানে খুব বেশি মানুষের বসবাস নেই। এই প্রদেশেই রয়েছে ইরানের সঙ্গে পাকিস্তানের ৯০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেলুচিস্তানে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের (সিপিইসি) মাধ্যমে চীন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিনিয়োগ করেছে। এটি চীনের বৈশ্বিক বেল্ট অ্যান্ড রোড অবকাঠামো উদ্যোগের দ্বিপাক্ষিক সম্প্রসারণ হিসেবে বিবেচিত।
বেলুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সিপিইসি প্রকল্পগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত চীনা নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু হিসেবে নির্ধারণ করেছে। প্রায় এক দশক আগে দুই দেশ এই বড় আকারের প্রকল্পটি শুরুর পর বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতে বেশ কয়েকজন চীনা নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন।